জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির কয়েকজন নেতা। তাঁকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের কথাও জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ রোববার রাতে কল্যাণ পার্টির শামছুদ্দিন পারভেজের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দলের নির্বাহী কমিটিতে থাকা ৪১ জন নেতাকে নিয়ে নতুন কমিটিতে গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে তাঁকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তিনি এর আগে দলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম নির্বাহী কমিটির অধিকাংশের মতামতকে তোয়াক্কা না করে অফিস নোটিশ ছাড়াই ১৩১ জনের নির্বাহী কমিটির মধ্য থেকে ১৫ জনের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেছেন। পাশাপাশি দলীয় আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে আওয়ামী লীগের অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দিতে কথিত ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামীয় নির্বাচনী জোটে যোগদান করেছেন তিনি।
তাই নির্বাহী কমিটির দুই–তৃতীয়াংশ সদস্য বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির গঠনতন্ত্রের ধারা-২০ উপধারা-৫–এর অনুচ্ছেদ-১ অনুযায়ী একাধিক বৈঠকের সিদ্ধান্তে মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পুনর্গঠিত নির্বাহী কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে দলীয় নীতি নৈতিকতা ও আদর্শকে উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত লোভ ও স্বার্থসিদ্ধির জন্য ‘যুক্তফ্রন্ট’ গঠন করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মুহাম্মদ ইবরাহিমকে প্ররোচিত করায় মহাসচিব আবদুল আউয়াল ও অতিরিক্ত মহাসচিব আবদুল্লাহ আল হাসানকেও দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নতুন কমিটিতে দলের বর্তমান যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও যুগ্ম মহাসচিব ওবায়দুল হক সিরাজীকে অতিরিক্ত মহাসচিব করা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন কমিটিতে পাঁচজনকে ভাইস চেয়ারম্যান, সাতজনকে যুগ্ম মহাসচিব, পাঁচজনকে সহকারী মহাসচিব ও ২০ জনকে সদস্য করা হয়েছে।
বহিষ্কার ও নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, কল্যাণ পার্টি একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। নির্বাচন কমিশনের কাছে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, তাতে চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া একই নাম ব্যবহার করতে পারেন কি না, সেটা বুঝে নেওয়ার আহ্বান রইল।
সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম আরও বলেন, ‘যাঁরা দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য উসকানি দিয়েছেন, তাঁদেরকে এমন নোংরা কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে ছিল বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। পাশাপাশি সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ১২–দলীয় জোটের মুখপাত্র ছিলেন দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। কিন্তু গত ২২ নভেম্বর হঠাৎ করেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। ওই দিনই তাঁকে ১২–দলীয় জোট থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।