কর্ণাটকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন সিদ্দারামাইয়া

0
157
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সিদ্দারামাইয়া

দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে দক্ষিণ ভারতের রাজ্য কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। একইসঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি ডি কে শিবকুমার।

শনিবার কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর কান্তিভেরা স্টেডিয়ামে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল থোয়ারচাঁদ গেহলট। মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি নতুন মন্ত্রিসভায় ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন কংগ্রেসের আরও আট বিধায়ক। তারা হলেন- ড. জি পরমেশ্বর, কে জে জর্জ, কে এইচ মুনিয়াপ্পা, সতীশ জারকিহোলি, রামালিঙ্গ রেড্ডি, প্রিয়াঙ্ক খাড়গে, এমবি পাতিল, জামির আহমেদ।

এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসলেন ৭৫ বছর বয়সী সিদ্দারামাইয়া। এর আগে ২০১৩ সালে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন সিদ্দারামাইয়া।

শনিবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের পাশাপাশি আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল অবিজেপি সম মনোভাবাপন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক দলের নেতাদের। এদিনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভঢরা, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ও দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাঝাগাম (ডিএমকে) প্রধান এমকে স্টালিন, মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ, জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ‘পিপল ডেমোক্রেটিক পার্টি’ (পিডিপি) প্রধান মেহেবুবা মুফতি, ‘ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি’ (এনসিপি) প্রধান শারদ পাওয়ার, ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) প্রধান ফারুক আব্দুল্লাহ, অভিনেতা কমল হাসান প্রমুখ।

তবে পূর্ব ঘোষণা মত শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে দূত পাঠিয়ে আমন্ত্রণ রক্ষা করেছেন তিনি। মমতার বদলে শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার সদস্য কাকলি ঘোষ দস্তিদার।

গত ১০ মে বিধানসভা নির্বাচনে ২২৪ আসনের মধ্যে ১৩৫টি আসন পেয়ে বিজেপিকে উৎখাত করে কংগ্রেস। পাশাপাশি একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে উঠে আসে তারা। ৬৬ আসন নিয়ে বিজেপি দ্বিতীয় এবং ১৯ আসনে জয় পেয়ে তৃতীয় হয় জেডি-এস।

কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে রেকর্ড জয়ের পরেও কংগ্রেসকে চিন্তায় ফেলে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার নিয়ে শিবকুমার ও সিদ্দারামাইয়ার ঠান্ডা লড়াই। মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। একদিকে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, অন্যদিকে রাজ্যটির কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমার। মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার জন্য দলের হাইকমান্ডকে এক প্রকার চাপ দিতে থাকেন শিবকুমার। ফলে পিছিয়ে দিতে হয় শপথ গ্রহণের দিন।

শিবকুমারের দাবি ছিল, ২০১৯ সালে কর্ণাটকে কংগ্রেস সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে গত প্রায় ৫ বছর ধরে কংগ্রেসকে নতুন করে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করানো এবং সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পেছনে রয়েছে তার অবদান। অন্যদিকে দলের বেশিরভাগ বিধায়কেরই সমর্থন ছিল দেশের রাজনীতিতে পাঁচ দশকের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সিদ্দারামাইয়ার পক্ষে। তাছাড়া শেষবারের মতো ভোটে লড়ছেন বলেও ঘোষণা দেন সিদ্দারামাইয়া।

অবশেষে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গের মধ্যস্থতায় দলের স্বার্থে উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে রাজি হন শিবকুমার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.