ট্রেনে ঈদযাত্রার প্রথম দিনে আজ সোমবার রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীর চাপ কম দেখা গেছে। ছিল না অতিরিক্ত কোনো যাত্রীও। যাত্রীরা স্টেশনে আসছিলেন এবং টিকিট দেখিয়ে প্ল্যাটফর্মের ভেতরে ঢুকছিলেন।
সরেজমিন দেখা যায়, কমলাপুর স্টেশনে বাঁশ বেঁধে সারিবদ্ধভাবে প্রবেশের অস্থায়ী পথ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যাত্রীদের টিকিট চেক করছেন। শুধু যাঁদের কাছে ট্রেনযাত্রার টিকিট আছে, তাঁদের প্ল্যাটফর্মে যেতে দেওয়া হচ্ছে।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ঢাকা বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহিদ উল্লাহ বলেন, সকালে ভিড় একটু বেশি ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনগুলো ছাড়তে শুরু করলে ভিড় কমে যায়। টিকিট ছাড়া কাউকে প্ল্যাটফর্মের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
হাতে গোনা কয়েকজনকে টিকিট বিক্রির কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তাঁদের কেউ কেউ যাত্রার নিয়মিত টিকিটের খোঁজ করছিলেন। কাউকে আবার ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাওয়ার টিকিটেরও খোঁজ করতে দেখা গেছে।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ৩ নম্বর কাউন্টারে মোহনগঞ্জের টিকিটের খোঁজ করছিলেন সালাম মিয়া। তিনি বলেন, ‘কাউন্টার থেকে বলছে কোনো টিকিটই নেই। বাসে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না।’
এ সময় কাউন্টারে টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা বিক্রয়কর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনারা কেউ কাউন্টারের সামনে ভিড় করবেন না। কাউন্টারে কোনো টিকিট নেই।’
ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের ভিড় কম। যাত্রীদের মধ্যে ট্রেনে ওঠার তাড়াহুড়াও নেই। ট্রেনের ভেতরে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ নেই। ট্রেনে যাত্রীদের কিছু আসন ফাঁকাও থাকতে দেখা গেছে।
দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরুর অপেক্ষায় ছিল কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস। ট্রেনটির একজন গার্ড বলেন, পৌনে ১১টায় ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগের একটি কমিউটার ছাড়তে দেরি করায় তাদেরও দেরি হচ্ছে। পরে ট্রেনটি ১৬ মিনিট দেরিতে ১১টা ১ মিনিটে ছেড়ে যায়।
ট্রেনটির যাত্রীরা বলেন, এবার ট্রেন যাত্রার অভিজ্ঞতা অন্য বছরের তুলনায় ভিন্ন রকম মনে হচ্ছে। স্টেশনে ভিড় তেমন নেই। ট্রেনে উঠতে কিংবা আসন পেতেও সমস্যা হয়নি।
কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, সকাল ৬টা থেকে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত ১৭টি ট্রেন ঢাকা ছেড়েছে। এর মধ্যে শুধু মহানগর প্রভাতী দুই ঘণ্টা দেরি করেছে। ট্রেনটি ৭টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল, ছেড়েছে ৯টা ৪৫ মিনিটে। গতকাল রাতের কুমিল্লার দুর্ঘটনার কারণে এমন দেরি হয়েছে বলে জানান তিনি।
মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার আরও বলেন, আজ সারা দিনে ৫২টি ট্রেন ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে ৩৭টি আন্তনগর এবং বাকি ১৫টি মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন। এ ছাড়া কাল মঙ্গলবার থেকে ৩টি করে ঈদযাত্রার বিশেষ ট্রেন চলবে।
কমলাপুর স্টেশনের কর্মকর্তারা বলেন, দৈনিক প্রায় ৫০ হাজার যাত্রী ঢাকা ছাড়তে পারবেন। এর মধ্যে ২৫ ভাগ দাঁড়ানো যাত্রীও রয়েছেন। প্রায় প্রতিটি ট্রেনেই এক-দুটি কোচ যুক্ত করা হচ্ছে।