কেউ নির্বাচন প্রতিহত করতে এলে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘কথায় কথায় আপনারা মাথা গরম করবেন না। ঠান্ডা মাথায় এই অপশক্তিকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করবেন। যদি কেউ নির্বাচন প্রতিরোধ করতে আসে, আমরা সর্বশক্তি দিয়ে জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ করব।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের মহানগর দক্ষিণ শাখা আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে। আমি সরকারি দলের সেক্রেটারি বলছি, দুই দিন পর সিটি করপোরেশন নির্বাচন, এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারি দল কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। গাজীপুরসহ সব সিটি নির্বাচন এবং আগামীতে জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। আমরা বিদেশিদের অনুরোধ করব, আপনারা আসুন এবং দেখুন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কীভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু (অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন) হয়।’
দলের নেতা-কর্মীদের সংঘাতে না জড়াতে আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে সংঘাত-পাল্টা সংঘাতে যাব না। আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব এই অপশক্তিকে। এই অপশক্তিকে বাংলার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হবে। আমরা ভুল থেকে শিক্ষা নিব—এই আশ্বাস জনগণকে দিতে হবে।’
দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কাতারের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে নেত্রী বলে গেছেন, কোনো সংঘাতে যাওয়া যাবে না। আমরা সংঘাতে যাব না, কিন্তু সংঘাত কেউ করতে এলে আমরা চুপ করে বসে থাকব? আমাদের ওপর যদি কেউ হামলা চালায়, তাহলে আমরা হামলা চালাব না? হামলা করলে তার সমুচিত জবাব কীভাবে দিতে হয়, তা আওয়ামী লীগ জানে।’
রাজশাহী বিএনপির নেতা শেখ হাসিনাকে হুমকি দেওয়ার পরও বিএনপির নেতারা চুপ কেন, এমন প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে ঝড় বয়ে গেছে, সারা দেশ গর্জন করে উঠেছে। শেখ হাসিনাকে কটূক্তি, হত্যার হুমকি দেওয়ায় বাংলাদেশের মানুষ অবাক হলো। কিন্তু বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটা কথাও বললেন না। বিএনপির কোনো জ্যেষ্ঠ নেতাও কথা বললেন না।
এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সবাই নীরব হয়ে আছেন, তাই আজকে প্রশ্ন জাগে, এটা তার (আবু সাঈদ চাঁদ) এক দফা নয়, এটা বিএনপির এক দফা। শেখ হাসিনাকে হত্যার মিশন নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে। শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তাই আজকে তার একমাত্র শত্রু। সে জন্যই বিএনপি ১৪ বছর পর আন্দোলনের ডাক দিয়েছে, কিন্তু জনগণের সাড়া না পেয়ে তারা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে যে জননেত্রী, তাঁকে স্তব্ধ করে দিতে হবে। এই ষড়যন্ত্র নিয়ে তারা আজ মাঠে নেমেছে।’
বিএনপির মহাসচিবের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, আমাদের পার্টির কোনো জেলার নেতা যদি খালেদা জিয়াকে হত্যা করার হুমকি দিত, তাহলে আপনারা কী করতেন? কী জবাব দিতেন, আমি জানতে চাই।’
সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, সারা দেশে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আগামী নির্বাচনের আগে তাদের মাঠ থেকে বিতাড়িত করা হবে।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় বিএনপি। এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ক্ষমতায় রাখবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহম্মদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ বক্তব্য দেন।