বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য আর কৃষ্টির ভিন্নতাভেদে পবিত্র রমজান মাসকে স্বাগত জানায়। বাংলাদেশেও রমজান এলে ঐতিহ্যগতভাবেই ইফতার নিয়ে নানা আয়োজন চোখে পড়ে। ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলের নামকরা রেস্তোরাঁর বিখ্যাত সব ইফতার আয়োজনের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন এ শহরের মানুষ। তাই রমজানে হালিম, কাবাব ও জিলাপির মতো খাবারের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী কিছু রেস্তোরাঁর নামও চলে আসে। এবারের রমজানে ইফতার আয়োজনের এই ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি ধরে রাখতে ফুডপ্যান্ডার ‘গ্র্যান্ড ইফতার টেকঅ্যাওয়ে ফেস্ট’ যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। এ উৎসবে এক ছাদের নিচেই মিলছে ঢাকার নামকরা রেস্তোরাঁর ঐতিহ্যবাহী ইফতার আয়োজন।
ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ারে ফুডপ্যান্ডা আয়োজিত এ উৎসব চলছে প্রতিদিন বেলা দুইটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত। একই সময়ে ফুডপ্যান্ডা অ্যাপেও সচল থাকে এ আয়োজনের সুইমলাইন। উৎসবটি চলবে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত। উৎসবে অংশ নেওয়া ঐতিহ্যবাহী সব রেস্তোরাঁ থেকে ইফতারের জন্য ভেন্যু থেকে তাদের পছন্দের খাবার পিকআপ করা বা বাসায় বসে ডেলিভারি নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতারা।
ভারতীয় খাবারের আসল স্বাদ পেতে ঢুঁ মারতে পারেন খাজানায়। ধানমন্ডির এ আয়োজনে অংশ নিয়েছে গুলশানের জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ ‘সিগনেচার বাই খাজানা’। ভারতীয় রসনার জন্য বিখ্যাত খাজানার মুখরোচক নানা পদ মিলছে এ উৎসবে। রয়েছে কেশারিয়া জালেবি, মিহিদানা রাবড়ি, কাবুলি চানা চাট, স্যাফরন ফিরনি, শাহি হালিম, দইবড়া, চায়না টাউন চিলি চিকেন, লক্ষ্ণৌ গোশত বিরিয়ানি। এ ছাড়া হারিয়ালি কাবাব, তাংরি কাবাব, তান্দুরি চিকেনের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া যেতে পারে রেশমি পরোটা। ভারতীয় এসব পদ মিলছে ১২৫ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে।
উৎসবে ঘুরতে এসেছেন পিয়াস ও আঁচল দম্পতি। কথা হলো তাদের সঙ্গে। পিয়াস বলেন, ‘ঢাকায় বসে ভারতীয় খাবারের স্বাদ পেতে খাজানার বিকল্প নেই। ধানমন্ডিতেই খাজানার ইফতার আয়োজন পাওয়া যাচ্ছে শুনে ফুডপ্যান্ডার এই উৎসবে এসেছি। জালেবি, কাবাব আর লক্ষ্ণৌ গোশত বিরিয়ানি কিনলাম। অন্য রেস্তোরাঁগুলোও ঘুরে দেখা হলো। ছিমছাম আর পরিপাটি হওয়ায় ঘুরতেও ভালো লাগছে।’
এখন ঢাকাবাসীর ইফতারে একটা বড় অনুষঙ্গের নাম বিরিয়ানি। ঢাকায় বিরিয়ানির জন্য যে কয়েকটি নাম সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়, তার মধ্যে হাজি নান্না বিরিয়ানি অন্যতম। হাজি নান্নার মোরগ পোলাওয়ের সুখ্যাতি সবার জানা। বিভিন্ন মসলার সঙ্গে মুরগির মাংস, ভেজে নেওয়া পেঁয়াজবাটা দিয়ে তৈরি হয় জিবে জল আনা মোরগ পোলাও। এ ছাড়া এই রেস্তোরাঁর স্টলে মিলছে পেস্তা বাদাম শরবত, মাটন বিরিয়ানি, বাসমতী মাটন কাচ্চি, বোরহানি, লাবাং আর হরেক রকম চিকেন রোস্ট। ৯০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে মিলছে এসব পদ।
ডিসেন্ট পেস্ট্রি শপের নবাবি হালিম এখন একনামেই চেনে ঢাকাবাসী। ঐতিহ্যবাহী এ রেস্তোরাঁও অংশ নিয়েছে এই উৎসবে। নবাবি হালিম ছাড়াও ডিসেন্টের স্টলে মিলছে কাশ্মীরি শরবত, দইবড়া, চিকেন সমুচা, বিভিন্ন রকম পরোটা, চিকেন দম বিরিয়ানিসহ হরেক স্বাদের খাবার। ৩০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে প্রতিটি ইফতার আইটেম মিলছে এখানে।
ঘিয়ে ভাজা পেঁচি জিলাপি ও চুপা রুস্তম মিলছে বাবুর্চি রেস্টুরেন্টে। স্টলটির বিক্রয়কর্মী জানালেন, হালিম, কাবাব, পরোটা, বিরিয়ানি আর খিচুড়ির নানা পদ রয়েছে। দইবড়া, চিকেন কাঠিরোল, চিকেন সাসলিক, বিফ তেহারি, চুপা রুস্তম আর ঘিয়ে ভাজা পেঁচি জিলাপির চাহিদা বেশি। নানা স্বাদের এই আইটেমগুলো পাওয়া যাচ্ছে ৬০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎসব প্রাঙ্গণে ভিড় জমছিল মানুষের। এক রাইডারের কাছ থেকে জানা গেল, উৎসব প্রাঙ্গণ থেকে ফুডপ্যান্ডা অ্যাপের পিকআপ অপশন দিয়ে পছন্দের খাবার কিনতে পারছেন ক্রেতারা। পাশাপাশি ঘরে বসে অন্য সময়ের মতো অর্ডারের সুযোগও রয়েছে