
বাংলাদেশের জন্য এলএনজি সরবরাহের জন্য সম্প্রতি মেয়াদোত্তীর্ণ সমঝোতা স্মারক নবায়ন এবং বাংলাদেশে প্রস্তাবিত স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনালের জন্য কারিগরি কাজ এগিয়ে নিতে উদ্যোগী হয়েছে দেশটি।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন শেরিদা আল কাবি দোহায় আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় এই প্রতিশ্রুতি দেন।
কাতারি প্রতিমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, আমরা যতটা সম্ভব বাংলাদেশকে সমর্থন করতে চাই এবং আমরা তা অব্যাহত রাখব।
কাতার এবং বাংলাদেশ ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে কাতার গ্যাসের সঙ্গে একটি জিটুজি প্রক্রিয়ায় ১৫ বছরের জন্য ১.৫-২.৫ মেট্রিক টন পেট্রোলিয়াম গ্যাস আমদানির জন্য একটি বিক্রয় ক্রয় চুক্তি (এলএনজি এসপিএ) স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির আওতায় বার্ষিক চল্লিশটি কার্গো আমদানি করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের জুনে দ্বিতীয় এলএনজি এসপিএ স্বাক্ষরিত হয় ১৫ বছরের জন্য অতিরিক্ত ১.৫ মেট্রিক টন এলএনজি প্রদানের জন্য, যা ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। এলএনজি এসপিএ সম্পর্কিত স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারকের মেয়াদ জানুয়ারিতে শেষ হয়ে যায়, যার ফলে কাতারি কর্তৃপক্ষ নতুন করে প্রতিশ্রুতি দেয়।
কাতারের প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এখনই সমঝোতা স্বাক্ষর করব। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব বজায় থাকবে এবং কাতার তার উৎপাদন দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে, যার ফলে এলএনজির দাম কমে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সাদ বিন শেরিদা আল কাবি বলেন, সরবরাহ নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিই সর্বোত্তম সমাধান।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস কাতারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, আমাদের জ্বালানি খাত পুনর্গঠনে কাতারের সহযোগিতা চাই। আমরা আমাদের সম্ভাবনাগুলো অনুসন্ধান করতে চাই কাতারের সহায়তায়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি জানান, বাংলাদেশের পরিকল্পনা রয়েছে কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের, যার সঙ্গে জুড়ে দেয়া হবে পাইপলাইন ও পুনর্গ্যাসকৃত এলএনজি সরবরাহ ব্যবস্থা।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের এলএনজি টার্মিনালগুলো বর্তমানে বছরে ১১৫টি কার্গো পরিচালনার সক্ষমতা রাখে।
বৈঠকে কাতারি প্রতিমন্ত্রী জানান, কাতার বাংলাদেশে ইউরিয়া সার রফতানিও বাড়ানোর চিন্তা করছে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ, প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।