এমবাপ্পের মাঠে ফেরার দিনে ফ্রান্সকে রুখে দিল পোল্যান্ড

0
68
এমবাপ্পে
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন শিপের নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে তাদের আত্মঘাতী গোলে সুবাদে জয় পায় ফ্রান্স। সেই ম্যাচে নাক ভেঙ্গে ছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তবে এক ম্যাচ পরেই মাঠে ফিরেছেন এই ফরাসি তারকা। দলের সেরা তারকা ফিরলেও জয় পায়নি ফ্রান্স।
 
দ্বিতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মাস্ক পরে খেলতে চেয়েছিলেন এমবাপ্পে, কিন্তু তাকে নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেননি ফ্রান্স কোচ। তবে তৃতীয় ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুর একাদশেই ছিলেন এই ফরোয়ার্ড। ম্যাচের ৫৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন এমবাপ্পে।
 
তবে সেই ব্যবধান বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ফ্রান্স। ৭৭তম ম্যাচে বক্সের মধ্যে ফাউল করে পোল্যান্ডকে পেনাল্টি উপহার দেন তারা। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলতে সমতায় ফেরান লেভানদোভস্কি। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হওয়ায় ড্র নিয়ে মাঠে ছাড়ে দুই দল।
 
এদিন ১৯তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগও পায় ফ্রান্স। এনগোলো কঁতের পাস ধরে উসমান দেম্বেলের শটটি অবশ্য ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। নকআউট পর্বে ওঠার আশা আগেই শেষ হয়ে যাওয়া পোল্যান্ডও শুরুতে বেশ আত্মবিশ্বাসী ফুটবল খেলে। সুযোগ পেলেই উঠতে থাকে পাল্টা আক্রমণে।
 
৩৪তম মিনিটে খুব ভালো একটা সুযোগ পান লেভানদোভস্কি; কিন্তু দারুণ পজিশনে থেকেও লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড করেন বার্সেলোনা স্ট্রাইকার। ৪২তম মিনিটে বক্সে দারুণ ক্ষীপ্র হয়ে উঠলেন এমবাপে। ছোট পাস বাড়ালেন সামনে, বার্কোলার টোকায় বল গেল গোলমুখে, চোখের পলকে সতীর্থের পাশ দিয়ে গিয়ে কোনাকুনি শট নিলেন চোট কাটিয়ে ফেরা তারকা ফরোয়ার্ড; দুর্দান্ত সেভে জাল অক্ষত রাখলেন গোলরক্ষক।
 
পরের মিনিটে আবারও রক্ষণ ভেঙে ঢুকে পড়েন এমবাপ্পে। দুরূহ কোণ থেকে শট নেন তিনি, এবারও তার প্রচেষ্টা কর্নারের বিনিময়ে রুখে দেন গোলরক্ষক লুকাস। গোল শূন্য থেকে বিরতিতে যায় দুই দল।
 
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই ফের শুরু হয়ে যায় ফ্রান্সের আক্রমণের ঝড়। প্রথম পাঁচ মিনিটেই গোলের জন্য তিনটি শট নেয় তারা, তবে প্রতিপক্ষের দুর্ভেদ্য দেয়াল ভাঙতে পারেনি তারা। কঁতের শট রক্ষণে প্রতিহত হওয়ার পর এমবাপ্পের বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন লুকাস। এরপর ফ্রান্স অধিনায়কের দ্বিতীয় শট পোস্টের একটু বাইরে দিয়ে যায়।
 
অবশেষে ৫৬তম মিনিটে ডেডলক ভাঙতে পারে দুবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা। তাদের টানা আক্রমণের মুখে এতক্ষণ ঠাণ্ডা মাথায় রক্ষণ সামলে আসছিল পোল্যান্ড; কিন্তু হঠাৎ করেই যেন খেই হারিয়ে ফেলেন ডিফেন্ডার ইয়াকুব কিভিওর। তিনি ডান দিক থেকে দেম্বেলে বক্সে ঢেকামাত্র তাকে ফাউল করে বসেন, সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পট কিকে দলকে এগিয়ে নেন এমবাপ্পে।
 
এগিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিট পর একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন আনেন দেশম। বার্কোলা, আদ্রিওঁ রাবিও ও কঁতেকে তুলে নামান অলিভিয়ে জিরু, এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা ও গ্রিজমানকে।
 
প্রথমার্ধে গোলের জন্য ছয়টি শট নেওয়া পোল্যান্ড বিরতির পর আর ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ২৫ মিনিটে একবারও সেভাবে প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়াতে পারেনি তারা, নিতে পারেনি কোনো শট। ৭২তম মিনিটে দূর থেকে একবার চেষ্টা করেন লেভানদোভস্কি, কিন্তু শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
 
সাত মিনিট পর ফ্রান্সের জয়ের আশা ফিকে হয়ে যায়। ডি-বক্সে ফরোয়ার্ড কারোলকে ফরাসি ডিফেন্ডার দায়দ উপামেকানো ফাউল করায় পেনাল্টি পায় অস্ট্রিয়া। লেভানদোভস্কির প্রথম স্পট কিক ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন মাইক মিয়াঁ, কিন্তু শট নেওয়ার আগেই তিনি গোললাইন থেকে এগিয়ে আসায় ফের শট নেওয়ার সুযোগ পান পোল্যান্ড অধিনায়ক। এবার আর ব্যর্থ হননি তিনি।
 
৮৫তম মিনিটে আবার এগিয়ে যাওয়ার নিশ্চিত সুযোগও পায় তারা। কিন্তু দারুণ পজিশন থেকে অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড জিরুর শট রক্ষণে প্রতিহত হয়।
 
বাকি সময়েও ফল বদলে দিতে পারেনি ফ্রান্স, পরিবর্তন হয়নি অন্য ম্যাচের ফলও। গ্রুপ রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় সবশেষ ২০০০ সালে ইউরোপ সেরা ট্রফি জেতা ফ্রান্সকে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.