বিভিন্ন সংসদীয় কমিটি, এনজিও, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এমনকি শিশুদের সঙ্গেও প্রাক্-বাজেট আলোচনা করতেন প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এসব আলোচনায় কখনো কখনো সাংবাদিকেরা উপস্থিত থাকতেন। কখনো আলোচনা শেষ করে ব্রিফিং করতেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের এবারের প্রাক্-বাজেট আলোচনার তালিকায় এখন পর্যন্ত প্রথম তিনটির বাইরে আর কারও নাম নেই বলে অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো জানায়। ব্রিফিং না রাখায় আলোচনায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা কী পরামর্শ দিলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে তা জানা সম্ভব হবে না। ফলে তাঁদের কোনো পরামর্শ সত্যিই বাজেটে থাকবে কি না, মিলিয়ে দেখা যাবে না তা–ও।
অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, আপাতত তিনটি প্রাক্-বাজেট আলোচনাই হচ্ছে। এর বেশি করার সম্ভাবনা কম। সূত্রমতে, আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হচ্ছে প্রাথমিকভাবে ৭ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এ আকার চলতি অর্থবছরের মূল বাজেট ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি থেকে ৭২ হাজার কোটি টাকা বেশি। আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে ৪ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা।
বর্তমান অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশ ধরার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আজ শুরু করলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন সমিতি ও সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।
জানা গেছে, মূল্যস্ফীতি ও বাজেটঘাটতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা, অপ্রয়োজনীয় ভর্তুকি কমিয়ে আনা, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা—আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এসব শর্ত পূরণের বিষয় বিবেচনায় রাখা হবে নতুন বাজেট প্রণয়নের সময়। সম্প্রতি ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের সঙ্গে এসব শর্ত সম্পর্কিত।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, তিনি আজ বিকেলে অনুষ্ঠেয় প্রাক্-বাজেট আলোচনায় অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন এবং অংশ নেবেন।
সেলিম রায়হান বলেন, দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা আছে। তা দূর করার কথা থাকতে হবে আগামী বাজেটে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার জন্য অনেকটাই দোষ চাপানো হয় আন্তর্জাতিক কারণের ওপর। কিন্তু অভ্যন্তরীণ কারণও কম দায়ী নয়।
আইএমএফের ঋণের কারণে কর ও ব্যাংক খাতে যেসব সংস্কার করার কথা আছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হলেও কিছুটা কাজের কাজ হবে বলে মনে করেন সেলিম রায়হান।