এনবিআরের আন্দোলনের জেরে আরও চার কর্মকর্তা বরখাস্ত

0
22
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আন্দোলনের সময় দাপ্তরিক কাজে বাধা দেওয়ায় আরও চার কর কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ সোমবার অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) এক আদেশে তাঁদের বরখাস্ত করা হয়। এই বরখাস্তের আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়।

যাঁরা বরখাস্ত হলেন, তাঁরা হলেন সিলেটের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু; খুলনার মোংলার কাস্টমস হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার আবুল আলা মোহাম্মদ আমীমুল ইহসান খান; চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির যুগ্ম কমিশনার সানোয়ারুল কবির ও খুলনার কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম।

আন্দোলনের জেরে এনবিআর সদস্য থেকে প্রহরী পদবি পর্যন্ত গত দেড় মাসে সব মিলিয়ে ৩১ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

আজ আইআরডি সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান চার কর্মকর্তার বরখাস্তের পৃথক চারটি আদেশে সই করেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকার কর্তৃক গত ১২ মে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারির পর এর বিরোধিতা করে এনবিআর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট এবং আয়কর বিভাগের কর্মচারীদের কর্মসূচি চলাকালীন দায়িত্বরত কর্মচারীদের দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনে বাধা প্রদান করা হয়েছে। এর পাশাপাশি কাজ ত্যাগ করে রাজস্ব ভবনে আসতে বাধ্য করতে সংগঠকের ভূমিকা পালনের মাধ্যমে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। তাই তাঁদের (চার কর্মকর্তা) বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮–এর ধারা-৩৯ (১) অনুযায়ী তাঁদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। চিঠিতে আরও বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তকালীন তাঁরা বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, গত মাসে এনবিআরে যে আন্দোলন হয়েছে, বরখাস্ত সবাই ওই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। কেউ কেউ নেতৃত্বও দিয়েছেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এই আন্দোলন হয়।

গত মে ও জুন মাসে রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ২৮ ও ২৯ জুন সারা দেশে কাজ বন্ধ করে দেন তাঁরা। এরপর ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেন তাঁরা। এরপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। আন্দোলন প্রত্যাহারের পর এ পর্যন্ত তিন সদস্য ও এক কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। কাজ বন্ধ রাখার দায়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া এনবিআরের ২ সদস্যসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। তাঁদের অধিকাংশই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—এই দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি হয়। এর পর থেকে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে যৌক্তিক সংস্কারে দাবিতে প্রায় দেড় মাস আন্দোলন করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.