প্রতিপক্ষহীন একতরফা সাধারণ নির্বাচনে কম্বোডিয়ার ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের রাজনৈতিক দল কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) জয়ের দাবি করায় দেশটির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে দেশটিতে কিছু বিদেশি সহায়তা কর্মসূচিও স্থগিত করছে ওয়াশিংটন।
সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। রোববার দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং একইদিন দেশটির বিরুদ্ধে এই ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) বিজয়ের ঘোষণা দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা কম্বোডিয়ায় কিছু বিদেশি সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করছে এবং গণতন্ত্রকে অবমূল্যায়ন করা ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন, রোববারের অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের দল সিপিপি কোনো কার্যকর প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হয়নি এবং এই নির্বাচন ‘অবাধ বা সুষ্ঠু ছিল না।’ ওয়াশিংটন এ নিয়ে ‘বিক্ষুদ্ধ’।
আরও পড়ুন: কম্বোডিয়ায় ভোট চলছে, অংশ নিতে পারেনি প্রধান বিরোধী দল
মিলার বলেন, ‘নির্বাচনের আগে কম্বোডিয়ার কর্তৃপক্ষ দেশটির রাজনৈতিক বিরোধী, মিডিয়া এবং সুশীল সমাজের বিরুদ্ধে হুমকি ও হয়রানিতে জড়িত ছিল। আর এটি দেশের সংবিধানের চেতনা এবং কম্বোডিয়ার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাকে ক্ষুণ্ন ও অবমূল্যায়ন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আর এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এমন ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করার পদক্ষেপ নিয়েছে যারা গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং একইসঙ্গে দেশটিতে কিছু বিদেশি সহায়তা কর্মসূচি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
রোববারের বহুল বিতর্কিত কম্বোডিয়ার এই নির্বাচনে ৮১ লাখ ভোটার ভোট দিয়েছেন বলে দেশটির নির্বাচন কমিটি জানিয়েছে। নির্বাচন কমিটির মতে, রোববারের নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ছিল ৮৪ শতাংশ। চলতি বছরের মে মাসে ‘কাগজে ত্রুটি থাকার’ অভিযোগে সিপিপির একমাত্র প্রতিপক্ষ ক্যান্ডেললাইট পার্টিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
হুন সেন বলেছেন, গত তিন দশকের মধ্যে এবারের নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে বিদেশিদের ভোট নস্যাৎ করে দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ ভোটাররা ব্যালটের মাধ্যমে করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
সমালোচকরা বলছেন, ৭০ বছর বয়সী হুন সেন কম্বোডিয়ার ক্ষমতায় আছেন গত ৩৮ বছর ধরে। তিনি তার বড় ছেলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে দলের ক্ষমতায় থাকার পথ পোক্ত করতেই বিরোধী শক্তিবিহীন এই নির্বাচন আয়োজন করেছেন।
এছাড়া সিপিপির সঙ্গে এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছে আরও ১৭টি রাজনৈতিক দল। যদিও এই ১৭টি দলের বেশিরভাগই নাম-সর্বস্ব। তাদের কোনও দলই এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে একটি আসনেও জয় পায়নি।