একটি কার্ডেই চড়া যাবে মেট্রোরেল ও ঢাকা নগর পরিবহনের বাসে

0
191
বাস রুট র‍্যাশনালাইজেশন কমিটির ২৬তম সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম। পাশেই দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ছবি: সংগৃহীত

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বাস রুট র‍্যাশনালাইজেশন কমিটির ২৬তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বাস রুট র‍্যাশনালাইজেশন কমিটির সদস্য। এই কমিটির আহ্বায়ক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মেয়র আতিকুল ইসলাম  বলেন, মেট্রোরেলের যাত্রীদের সেবা দেওয়ার জন্য আরও নতুন দুটি রুটে (২৪ ও ২৫ নম্বর যাত্রাপথে) ঢাকা নগর পরিবহন চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই দুটি রুটে বাস চালুর উদ্দেশ্যে ঢাকা নগর পরিবহনের বাস থেকে যাত্রীরা যাতে নেমে মেট্রোরেলে উঠতে পারেন এবং মেট্রোরেল থেকে নেমে বাস ব্যবহার করতে পারেন। এই দুই রুটে প্রাথমিকভাবে ৫০টি বাস চলবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২৪ নম্বর যাত্রাপথ হচ্ছে মোহাম্মদপুরের ঘাটারচর থেকে বসিলা হয়ে, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, শিশুমেলা, আগারগাঁও, মিরপুর ১০ দিয়ে কালসি উড়ালসড়ক, বিমানবন্দর, উত্তরার জসিমউদ্‌দীন হয়ে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত। আর ২৫ নম্বর যাত্রাপথটি হচ্ছে, ঘাটারচর থেকে বসিলা, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, আসাদগেট, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, খামারবাড়ি, বিজয় সরণি, জাহাঙ্গীর গেট, বি এফ শাহিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মহাখালী, কাকলি, বনানী, বিমানবন্দর সড়ক ও জসিমউদ্‌দীন হয়ে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত।

বর্তমানে তিনটি রুটে ঢাকা নগর পরিবহনের বাস চলাচল করছে। এসব বাসকে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে যাত্রী তোলা, যত্রতত্র না থামা, দাঁড়িয়ে যাত্রী না নেওয়াসহ নানা নির্দেশনা দেওয়া আছে। তবে নির্দেশনা না মানার বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিছু ব্যত্যয় আমরা লক্ষ করেছি। বিশেষ করে টিকিট না কেটে বাসে ওঠার একটা প্রবণতা আমরা লক্ষ করছি। সেটা কোনোভাবেই ঢাকা নগর পরিবহনে বরদাশত করা হবে না। সবাইকে টিকিট কাউন্টারের মাধ্যমে টিকিট কেটে বাসে উঠতে হবে।’

নগর পরিবহনে যাত্রীসেবার মান অক্ষুণ্ন রাখা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র বলেন, ‘বিআরটিসি আমাদের নিশ্চিত করেছে, ঢাকা নগর পরিবহনের জন্য যে নির্দিষ্ট বাস, সেটা শুধু ঢাকা নগর পরিবহনের যাত্রাপথেই চলবে। এসব বাস অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না। আর ট্রান্স সিলভাকে আমরা কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেব। সে জন্য তাদের ১৫ দিন সময় দেব। তারা যদি নির্ধারিত নীতিমালা ও নিয়ম অনুযায়ী এ সেবা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বা ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের সঙ্গে আমরা চুক্তি বাতিল করব। বিআরটিসি যদি রাজি হয়, তাহলে বিকল্প হিসেবে বিআরটিসি দ্বারাই পরিচালিত হবে। অথবা নতুন উদ্যোক্তা নিয়ে আমরা এই সেবা পরিচালনা করব।’

বাস রুট র‍্যাশনালাইজেশন কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, নগর পরিবহনের ২১, ২৬ এবং ২২ নম্বর রুটে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছেন। নগর পরিবহন চালুর পর এ পর্যন্ত ৭ কোটি টাকার বেশি আয় হয়েছে বলে জানান তিনি।

ঢাকার গণপরিবহনের মালিকের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। আর ঢাকা ও এর আশপাশে দুই শতাধিক পথে (রুট) বাস চলাচল করে। যাত্রী তোলার জন্য এক বাসের চালক অন্য বাসের সঙ্গে পাল্লায় লিপ্ত হন। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ে। এ ব্যবস্থা পরিবর্তনে ২০০৪ সালে ঢাকার জন্য করা ২০ বছরের পরিবহন পরিকল্পনায় ‘বাস রুট র‍্যাশনালাইজেশন’ বা বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজ চালু করার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ এ ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হচ্ছে লক্কড়ঝক্কড় বাস তুলে নেওয়া এবং সহজ শর্তের ঋণে নতুন বাস নামানো। বাস চলবে পাঁচ-ছয়টি কোম্পানির অধীন। মালিকেরা বিনিয়োগের হার অনুসারে লভ্যাংশ পাবেন। বাস রুট র‍্যাশনালাইজেশন কমিটি এই পদ্ধতিতে রাজধানীর বিভিন্ন রুটে বাস নামাচ্ছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ঢাকা নগর পরিবহন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.