শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কিংবা দরিদ্রতা কোনোটাই হার মানাতে পারেনি। ডান হাত নেই। বাঁ হাতে লিখেই এসএসসিতে পেয়েছেন জিপিএ-৫। বলছিলাম জয়পুরহাটের অদম্য কিশোর হুজাইফার কথা। সে আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ভানুরকান্দা গ্রামের কৃষক মনজুর রহমান ও শাহানা দম্পতির ছেলে।
জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে হাসি ফুটিয়েছেন বাবা-মায়ের মুখে। এবার ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার অদম্য ইচ্ছা নিয়েই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান হুজাইফা মোল্লা।
জন্ম থেকেই হুজাইফা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। তার ডান হাতের কুনুইয়ের নিচের অংশ নেই। শিক্ষাজীবনের প্রতিটি শ্রেণিতেই দিয়েছে মেধার পরিচয়।
এক হাত না থাকা হুজাইফা পেয়েছেন জিপিএ-৫, হতে চান ম্যাজিস্ট্রেট
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন প্রত্যেক শ্রেণিতেই ছিল প্রথম। এরপর সোনামুখী উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তির পর প্রথম হয়ে ষষ্ঠ থেকে সপ্তম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়। পরে অষ্টম শ্রেণিতে দ্বিতীয় হলেও নবম ও দশমে প্রথম স্থান অধিকার করে সে।
হুজাইফা গণমাধ্যমকে বলেন, জন্ম থেকেই ডান হাত নেই। বাঁ হাত দিয়ে কাজকর্ম করি। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার ইচ্ছা বড় হয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হবো। ইচ্ছা আর চেষ্টা থাকলে কোনো প্রতিবন্ধকতাই কখনও বাধা হতে পারে না, প্রমাণ করে দিতে চাই।
হুজাইফার বাবা মনজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ছোট থেকে হুজাইফা পড়ালেখায় মেধাবী। সে কখনও নিজেকে প্রতিবন্ধী কিংবা শারীরিকভাবে অক্ষম মনে করে না। পরিবারে অভাব-অনটন থাকায় তাকে নিয়ে বেশ চিন্তিত। তার ফলাফলে আমরা খুব খুশি হয়েছি।
সোনামুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, হুজাইফা বিদ্যালয়ের অন্যতম মেধাবী শিক্ষার্থী। সে হার মানতে রাজি নয়। বাম হাত দিয়ে লিখেই সে প্রথম স্থান অধীকার করেছে। বিদ্যালয় থেকে তাকে উপবৃত্তিসহ সকল সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আশা করি, সে অনেক ভালো পর্যায়ে যাবে।
হুজাইফাকে সমাজসেবা দপ্তর থেকে আর্থিক ভাতা করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা সবসময় তার পাশে আছি। বাঁ হাত দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পাওয়ায় তাকে দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হবে।