উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে বহুপাক্ষিক সহায়তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ওপর জোর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের দাবি, ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং চলমান বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংস্কারের কারণে বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এজন্য বিশ্বব্যাপী আর্থিক কাঠামো সংস্কারের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তহবিলের সম্প্রসারণ ও বিভাজন এবং তহবিলের গুণমানে উদ্বেগ রয়েছে তাদের।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) অর্গানাইজেশন অব ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) ‘বহুপক্ষীয় উন্নয়ন অর্থায়ন প্রতিবেদন ২০২৪’ নিয়ে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বক্তারা কথাগুলো বলেন। ঢাকায় অনুষ্ঠানটির সহ–আয়োজক ছিল বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা বহুপাক্ষিক উন্নয়নের কার্যকারিতা অর্জনের জন্য উন্নত সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে বলেন, বহুপাক্ষিক উন্নয়ন অর্থায়ন জোরদার করতে উদীয়মান দাতাদের সঙ্গে বৃহত্তর সম্পৃক্ততাকে উৎসাহিত করতে হবে।
বাংলাদেশসহ যেসব দেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাচ্ছে, তারা নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে আছে মন্তব্য করে বিশেষজ্ঞরা বলেন, এ উত্তরণের পর রপ্তানিতে এখনকার মতো শুল্কমুক্ত সুবিধা মিলবে না। স্বল্প সুদে ঋণও পাওয়া যাবে না। এসব দেশের জন্য বহুপক্ষীয় উন্নয়ন অর্থায়ন বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু ওইসিডিভুক্ত ধনী দেশগুলোর অর্থায়ন কমে যাওয়ায় সংকট দেখা দেওয়া স্বাভাবিক।
স্বাগত বক্তব্যে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে বলেন, বহুমুখী টেকসই উন্নয়নে অর্থায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাই ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে বহুপাক্ষিক উন্নয়ন অর্থায়ন ব্যবস্থা ও বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংকের (এনডিবি) সম্প্রসারণ প্রয়োজন।
অর্থনৈতিক মন্দা, দুর্যোগ, যুদ্ধসহ নানান বিষয় বৈশ্বিক অর্থনীতিকে সমস্যায় ফেলছে দাবি করে সিপিডির রিসার্চ ফেলো সৈয়দ ইউসুফ বলেন, বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে বৈদেশিক ঋণ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যা আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পে প্রয়োজন হয়। আবার এ ধরনের ঋণ আমাদের অর্থনীতিতে অনেক দুর্বলতা তৈরি করেছে বলে মনে করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সোশ্যাল পলিসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের মুহাম্মদ আসিফ ইকবাল, বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ইকোনমিক গভর্ন্যান্স ইনিশিয়েটিভের সহকারী পরিচালক ঋষিকেশ রাম ভান্ডারী, শ্রীলঙ্কার ইনস্টিটিউট অব পলিসি স্টাডিজের গবেষণা পরিচালক নিশা অরুণাতিলকেসহ অনেকে।