- বেড়েছে গরুর মাংস, মাছ, ডিম, চিনি, পেঁয়াজ ও আলুর দাম
- চাল ও সবজির দর কিছুটা কমেছেঈদের ছুটি উপভোগ শেষে এখনও ঢাকায় ফিরছে মানুষ। ফলে কাঁচাবাজারে বেচাকেনা আগের মতো জমেনি। তবে গত কয়েক দিনে চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, স্বাভাবিক লেনদেন শুরু হয়নি। চাহিদা তুলনামূলক কম থাকায় অধিকাংশ পণ্যের দাম ছুটির আগের তুলনায় সামান্য কমেছে বা স্থিতিশীল।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার খিলগাঁও এবং কারওয়ান বাজারে দেখা গেছে, এরই মধ্যে বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। চিনির দরও ঊর্ধ্বমুখী। বাড়তি দামের কারণে কারওয়ান বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা চিনি বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। অন্য সব সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা কমলেও আলুর দাম ৫ টাকা বেড়েছে। মাছের বাজারে জোগান বেশ কম।
তবে ঢাকার দুটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজি বা মুদি বাজারের বেশিরভাগ পণ্যের দাম সামান্য কমলেও মাংসের বাজার চড়া। গরুর মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও ঈদের আগে বাজারভেদে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিকিকিনি হয়েছিল। অবশ্য ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার মনিটরিং বিভাগের দাবি, এক সপ্তাহ আগের মতো গতকালও ঢাকায় ৭৩০-৭৫০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে।
গতকাল টিসিবির খুচরা বাজার দরের তালিকায় দেখা গেছে, প্রতি কেজি চিনির দাম ১১৫-১২৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১১৫-১২০ টাকা। অর্থাৎ কিছু ক্ষেত্রে ৫ টাকা কমেছে। তবে প্রকৃত বাজারচিত্র ভিন্ন। বাড়তি দর নিয়ে ক্রেতা ও সরকারি বাজার মনিটরিং দলের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার ভয়ে গতকাল কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা কাউকেই চিনি বিক্রি করতে দেখা যায়নি। চিনি চাইলে জবাব একটাই– ‘নেই’।
এর কারণ জানতে চাইলে ছামিরান স্টোরের মালিক মো. শাহজাহান বলেন, পাইকারিতে যে দরে চিনি মিলছে, তাতে ১৩০ টাকার কমে বিক্রির সুযোগ নেই। ঈদের আগেও চিনি ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ক্রেতারা এখন ১১০-১১৫ টাকা দরে চিনি চাচ্ছেন। এদিকে সরকারের লোকজন বেশি দরের জন্য কৈফিয়ত চান। এর চেয়ে চিনি বিক্রি না করাই ভালো।
মুদি বাজারের অন্য সব পণ্যের দাম স্বাভাবিক আছে বলে জানান কারওয়ান বাজারের দোকানিরা। আল্লার দান রাইস এজেন্সির মালিক মো. আওয়াল জানান, ছুটির আগের তুলনায় এখন চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা কম। মিনিকেট ৬৮-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রি ২৮ কেনাবেচা হচ্ছে ৫০-৫২ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ৫২-৫৬ টাকা।
দোকানি মনসুর বলেন, ঢাকায় এখনও সব মানুষ ফেরেনি। বাজারে ক্রেতা কম বলে চাহিদা কম। মুদি বাজারের সব পণ্যের দাম আগের মতোই আছে। তবে এর মধ্যেও কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। যেমন টিসিবি জানিয়েছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগেও যেখানে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৩০-৪০ টাকা ছিল, গতকাল তা ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজের দামও কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৪০-৫০ টাকা হয়েছে। দেশি রসুনের দামও কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে।
টিসিবির খুচরা বাজার দরের তালিকা অনুযায়ী, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ২৩০-২৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০০-২১৫ টাকা। রুই মাছের দাম ১০০ টাকা কমে প্রতি কেজি ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাষের রুই ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা এবং দেশি রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রায় সব সবজির দাম ঈদের আগের তুলনায় কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি পটোল মিলছে ৪০-৫০ টাকায়। ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। ঝিঙা ৬০-৭০ টাকা, কাঁকরোল ৭০-৮০ টাকা ও বেগুন ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আলুর দাম বেড়ে ৩০-৩৫ টাকা হয়েছে।