লেবানন ও ফিলিস্তিনের গাজায় গতকাল রোববারও নির্বিচার হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর মাঝেই ইসরায়েলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হাইফায় পাল্টা হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উপেক্ষা করে হাইফা ও তিবেরিয়াস শহরে আঘাত হেনেছে হিজবুল্লাহর রকেট। আহত হয়েছে ১০ জন।
ইসরায়েলে হামাসের হামলার এক বছর পূর্ণ হলো আজ সোমবার (৭ অক্টোবর)। এর পরপরই গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। শুরু হয় সর্বাত্মক যুদ্ধ। গাজায় এখনো ইসরায়েলের চাপিয়ে দেওয়া সেই যুদ্ধ চলছে।
যুদ্ধ এখন আর শুধু গাজায় সীমাবদ্ধ নেই, বরং লেবানন-সিরিয়ায় একের পর এক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরুর বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে লেবানন ও গাজায় হামলা এবং হাইফায় পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটল।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, রোববার হিজবুল্লাহর রকেটের আঘাতে হাইফায় বেশ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের খবর, হাইফা ছাড়াও দেশটির তিবেরিয়াস শহরে রকেট হামলা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১০ জন আহত হয়েছেন।
তবে হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, তারা হাইফার দক্ষিণাঞ্চলের একটি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ‘ফাদি ১’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
এদিকে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে রোববার জোরালো বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মূলত ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর গোয়েন্দা সদর দপ্তর আর অস্ত্রের মজুতাগারে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এ ছাড়া লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল ও বেকা অঞ্চলেও হামলা হয়েছে।
গাজার হামাস ও লেবাননের হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরান। হামাস-হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের জবাবে গত সপ্তাহে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরান। এর মধ্য দিয়ে পুরো অঞ্চলে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট রোববার বলেন, দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করলেও ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে তাঁর দেশ।
আগামী বুধবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে ইয়োভ গ্যালান্টের বৈঠক করার কথা রয়েছে। এর আগে সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, সম্ভাব্য সবকিছু নিয়েই আলোচনা হচ্ছে।
সতর্ক করে দিয়ে ইয়োভ গ্যালান্ট আরও বলেন, কাছে ও দূরের সব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম ইসরায়েল। আর এটা আমরা আগেই প্রমাণ করেছি।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই বলেছেন, প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ইসরায়েল যদি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে চায়, তাতে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দেবে না।