মৌসুমের সামান্য রদবদলেই হাঁচি-কাশি শুরু হয়ে যায়। সম্ভবত দুর্বল ইমিউনিটিই এর কারণ। অনেকেই ভাবেন, ভালো ইমিউনিটি জিনগত ব্যাপার। কিন্তু জিন ছাড়াও এমন অনেক ফ্যাক্টর রয়েছে, যেগুলো ইমিউনিটির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। স্ট্রেস, পুষ্টি, এক্সারসাইজ এবং মেডিটেশন এর মধ্যে অন্যতম। ইমিউনিটি আসলে শরীরের ডিফেন্স সিস্টেম, যা বিভিন্ন ধরনের বাহ্যিক টক্সিন, কেমিক্যালস, ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেয়। তবে অসুস্থ হওয়া মানে এই নয়, আপনার লাইফস্টাইলে কোনো ত্রুটি রয়ে গেছে। চূড়ান্ত স্বাস্থ্যসচেতন মানুষও অসুস্থ হতে পারেন। তবে ঘন ঘন অসুস্থ হওয়া অপুষ্টি এবং দুর্বল ইমিউনিটির পরিচায়ক। ইমিউনিটি বাড়াতে তাই নজর দিন বিশেষ কিছু দিকে।
পুষ্টি হোক শরীরের অস্ত্র
আমাদের শরীরে যে ইমিউন বডিস রয়েছে, তারা মূলত প্রোটিন দিয়ে তৈরি। সুতরাং, ভালো ইমিউনিটির জন্য শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন থাকা জরুরি। ডেইরি প্রডাক্ট, লিন মিট, মাছ এবং ডাল প্রোটিনের অন্যতম উৎস। ডেইরি প্রডাক্টের মধ্যেও টক দই এবং ইয়োগার্ট ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে ভালো। এ ছাড়া প্ল্যান্ট ফুডসও ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, ক্যান্সার প্রতিরোধে নিরামিষাশীদের শরীরের শ্বেতরক্তকণিকা আমিষাশীদের চেয়ে বেশি কার্যকরী। নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও এ ক্ষেত্রে জরুরি ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি, ই, ক্যারোটিনয়েডস, জিঙ্ক, আয়রন, কপার এবং সেলেনিয়াম তার মধ্যে অন্যতম। ভিটামিন সি’র জন্য কাঁচালঙ্কা, পেয়ারা, টমেটো, খরমুজ, ভিটামিন ই’র জন্য চীনাবাদাম, ভেজিটেবল অয়েল, কাজু ইত্যাদি খেতে পারেন। এই দুই প্রকার ভিটামিনের সঙ্গে ক্যারোটিনয়েডস খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো! তরমুজ, সবুজ শাকসবজি, টমেটো, আম ইত্যাদি শরীরে ন্যাচারাল কিলার সেল এবং টি-লিম্ফোসাইটের পরিমাণ বাড়িয়ে ইমিউনিটি আরও শক্তিশালী করে তোলে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে হুইট ব্র্যান, জোয়ার, বাজরা, শেলফিশ, বাদাম, বাদামের তেল খেলে সর্দি-কাশি থেকেও সুরক্ষা পাবেন। তবে অনেক সময়ই খাবারের গুণগত মানের জন্য শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না। তাই এর সঙ্গে কোনো মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নিতে পারলে ভালো।
ন্যাচারাল ইমিউন বুস্টার
‘সুপার ফুডস’ প্রতিদিন ডায়েটে রাখলে সুস্থ থাকাও সহজ হবে। আমাদের চারপাশে যেসব সুপার ফুডস রয়েছে, রসুন তার মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া মৌরি, হলুদ, আদা, লবঙ্গ এবং দারচিনিও ইনফেকশনের বিরুদ্ধে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। ঘন ঘন চা-কফির অভ্যাস কমিয়ে গ্রিন টি বেছে নিতে পারেন। এতে থাকা ক্যাটেকিনসের অ্যান্টি-কারসিনোজেন হিসেবে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। মনে রাখবেন, মজবুত ইমিউনিটি গড়ে তুলতে অনবরত শরীরের খেয়াল রাখা প্রয়োজন। আর সেখানে আপস করলে মাশুলটাও আপনাকেই গুনতে হবে।