আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে আচমকাই ইতালি জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচের চাকরি ছেড়েছিলেন। সৌদি আরবে যাওয়ার গুঞ্জন উঠলেও এটা কোনো কারণ নয় বলে জানিয়েছিলেন তখন। তবে দুই সপ্তাহ পর দেখা যাচ্ছে, গুঞ্জনই সত্যি। সৌদি আরব জাতীয় ফুটবল দলের কোচের চাকরি নিয়েছেন রবার্তো মানচিনি।
৫৮ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান ২০২৭ পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বছরে আড়াই কোটি ইউরো বেতন দেওয়া হবে তাঁকে।
ইতালি ২০১৮ বিশ্বকাপে জায়গা করতে ব্যর্থ হওয়ার পর মানচিনিকে কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর অধীন খেলে ২০২০ ইউরোর শিরোপা জেতে আজ্জুরিরা, টানা ৩৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার বিশ্ব রেকর্ডও গড়ে। তবে ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব উতরাতে না পারলেও ২০২৬ পর্যন্ত তাঁকেই কোচ হিসেবে রাখতে চেয়েছিল ইতালি ফুটবল ফেডারেশন। এমনকি চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় দলের পাশাপাশি অনূর্ধ্ব-২০ ও অনূর্ধ্ব-২১ দলের সমন্বয়কও করা হয় তাঁকে।
তবে দায়িত্বের পরিধি বড় হওয়ার কয়েক দিন পরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন মানচিনি। এর কয়েক দিন পর চারটি ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। সৌদি আরবের প্রস্তাবই চাকরি ছাড়ার কারণ কিনা জিজ্ঞেস করা হলে বলেন, ‘আমি একজন ফুটবল ম্যানেজার, বসে থাকব না। তবে এর পেছনে সৌদি আরবের কোনো বিষয় নেই।’
এরপর গতকাল রাতে সৌদি আরব ফুটবল ফেডারেশনের টুইট অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পোস্টে ঘোষণা দেওয়া হয়, মানচিনি সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ভিডিওর একটি অংশে মানচিনি বলেন, ‘আমি ইউরোপে ইতিহাস গড়েছি। এবার সৌদির হয়ে ইতিহাস গড়ার সময়।’
পরে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকেও একটি টুইট করেন মানচিনি।
ইতালির গাজেত্তা দেল্লো স্পোর্ত জানিয়েছে, চার বছরের চুক্তিতে বছরে কর ছাড়াই আড়াই কোটি ইউরো করে আয় করবেন মানচিনি। আজ সৌদি আরব তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোচ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
সৌদি আরব জাতীয় দলের হয়ে মানচিনি প্রথমবার ডাগআউটে দাঁড়াবেন ৮ সেপ্টেম্বর কোস্টারিকার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে। ম্যাচটি হবে সৌদি আরবের মালিকানাধীন ইংলিশ ক্লাব নিউক্যাসল ইউনাইটেডের মাঠ সেন্ট জেমস পার্কে। একই মাঠে চার দিন পর মানচিনির দলের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া।
সৌদি আরব ও ইতালি জাতীয় দলের আগে ইতালির ক্লাব ফিওরেন্তিনা, লাৎসিও ও ইন্টার মিলান, তুরস্কের গ্যালাতাসারে, রাশিয়ার জেনিত সেন্ট-পিটার্সবার্গ এবং ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার সিটিকে কোচিং করিয়েছিলেন মানচিনি। ২০১২ সালে তাঁর অধীনে খেলেই প্রথম প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জেতে সিটি।