ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে গোল করায় ৬৬ দলের পেছনে রিয়াল

0
22
রিয়ালের এমন উদ্‌যাপন এবার কমই দেখা গেছে, এএফপি

রিয়াল মাদ্রিদ নামটা শুনলে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের বুক কাঁপে। গোল করার জন্য, আক্রমণ দিয়ে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাদের আলাদা একটা খ্যাতি আছে। যুগে যুগে রিয়ালের আক্রমণভাগ নিয়ে কোচেদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ দেখা গেছে। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো, এবারের মৌসুমে চিরচেনা সেই খুনে মেজাজের রিয়ালকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না।

জাবি আলোনসোর দলের গোল করা নিয়ে যেন একধরনের অনীহা তৈরি হয়েছে। এই ‘নির্লিপ্ততা’ রিয়ালের খেলার ওপর প্রভাব ফেলছে। তবে রিয়ালের ভাগ্য ভালো যে তাদের দলে কিলিয়ান এমবাপ্পে আছেন। ফরাসি ফরোয়ার্ড না থাকলে এই মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের অবস্থা কোথায় থাকত, তা একটা বড় প্রশ্ন।

রিয়াল ও আর্জেন্টিনার সাবেক ফুটবলার হোর্হে ভালদানো ঠিক এই প্রশ্নটাই তুলেছেন। তাঁর কথা হলো, ফরাসি তারকার গোলগুলো না থাকলে রিয়াল আসলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াত? এই ছোট্ট প্রশ্নের ভেতরেই লুকিয়ে আছে এক কঠিন বাস্তবতা।

লা লিগায় ১৮ ম্যাচে রিয়াল গোল করেছে ৩৬ টি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার চেয়ে যা ১৫ গোল কম! ৩৬ গোল করতে আলোনসোর দলকে শট নিতে হয়েছে ১২৮ টি। গোল করার হার মাত্র ২৮.১২ শতাংশ। অন্যদিকে হ্যান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনার ১৩৬ শট নিয়ে গোল পাওয়ার হার ৩৫.৫ শতাংশ।।

২০২৫ সালে ম্যাচের পর ম্যাচে গোল করেছেন এমবাপ্পে
২০২৫ সালে ম্যাচের পর ম্যাচে গোল করেছেন এমবাপ্পে, এএফপি

আরও অবাক করা তথ্য হলো, গোল করার এই হারে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের ৬৬টি দল রিয়ালের চেয়ে এগিয়ে! তালিকায় সবার ওপরে টটেনহাম (৪৬.৫ শতাংশ)। তবে শুধু লক্ষ্যে শট নেওয়ার হিসেবে রিয়ালের ওপরে আছে শুধু বার্সেলোনা (১৩৬) ও বায়ার্ন মিউনিখ (১২৯)।

তার মানে রিয়াল আক্রমণ করছে ঠিকই, কিন্তু জাল খুঁজে পাচ্ছে না। সমস্যাটা মূলত গোল করার দক্ষতায়। এখানেই বারবার ফিরে আসে এমবাপ্পের নাম। ৬১টি শট নিয়ে ২৯টি গোল করেছেন তিনি। গোল করার হার ৪৭.৫ শতাংশ। অথচ ভিনিসিয়ুস (১৮ শতাংশ) ও রদ্রিগোরা (১৬ শতাংশ) নিজেদের ছায়া হয়ে আছেন।

চ্যাম্পিয়নস লিগের চিত্রটা তো আরও করুণ। সেখানে ৩৬ দলের মধ্যে কার্যকারিতার দিক থেকে রিয়ালের অবস্থান ১৭ তম। ইউরোপের মঞ্চে রিয়ালের ১৩ গোলের ৯টিই এমবাপ্পের। বাকি ৪টি গোল কোনোমতে ভাগ করে নিয়েছেন বেলিংহাম, ব্রাহিম ডিয়াজ, কামাভিঙ্গা ও রদ্রিগো।

লিগ হোক বা ইউরোপ—সবখানেই দৃশ্যটা একই। লা লিগায় দলের মোট গোলের অর্ধেকই (৩৬ টির মধ্যে ১৮ টি) এমবাপ্পের পা থেকে আসা। এমবাপ্পে নিজেও জানেন, ব্যক্তিগত মাইলফলক দিয়ে ট্রফি জেতা যায় না। তাই তিনি বারবার বলছেন, শিরোপা না জিতলে এসব সংখ্যার কোনো দাম নেই।

শীর্ষ দশ ইউরোপীয় লিগ মিলিয়ে হ্যারি কেইন ও আর্লিং হালান্ড তার চেয়ে একটি করে বেশি গোল করেছেন (১৯), তবে শট অন টার্গেটের দিক থেকে তাঁরা এমবাপ্পের চেয়ে পিছিয়ে আছে। রিয়াল ফরোয়ার্ডের ৩৯টি শটেরর বিপরীতে হালান্ডের শট ৩৭ এবং কেইনের ৩৫

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.