আসাদের পতন, নবযুগের ঘোষণা দিলেন সিরিয়ায় বিদ্রোহীরা

0
13
আসাদের পতন
বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও এর মধ্য দিয়ে তার দীর্ঘ ২৪ বছরের শাসনের অবসান হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দামেস্ক দখলের পর এরই মধ্যে নতুন এক যুগ শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন বিদ্রোহীরা।
 
রোববার (৮ ডিসেম্বর) একটি প্লেনে চড়ে অজ্ঞাত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে দামেস্ক ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট আসাদ। খবর রয়টার্সের।
 
এর আগেই সিরিয়ার রাজধানীতে প্রবেশের কথা জানান বিদ্রোহীরা। দামেস্কের উপকণ্ঠে একটি কারাগার থেকে বন্দিদের মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে বলেও ঘোষণা দেন তারা।
 
এদিকে, সেনা প্রত্যাহারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই দামেস্কের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের ‘স্বাধীনতা’র স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো এলাকা। ‘আসাদ পালিয়ে গেছেন’ এবং ‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক’; এরকম বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
 
অনলাইনে প্রকাশিত এবং আল-জাজিরার যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উমাইয়াদ স্কয়ারে একটি পরিত্যক্ত সামরিক ট্যাংকের ওপর দাঁড়িয়ে মানুষ উল্লাস করছে এবং উদযাপনের গান গাইছে।
 
এরই মধ্যে দামেস্ক দখলের পর বিদ্রোহীরা একটি বিবৃতি দিয়েছেন বিদ্রোহীরা। এতে তারা ঘোষণা করেছেন, বাশার আল আসাদের পতন দেশটির ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। বাথ শাসনের অধীনে ৫০ বছরের দমন এবং ১৩ বছরের অপরাধ, নিপীড়ন ও স্থানচ্যুতির পর, দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আজ আমরা সেই অন্ধকার যুগের সমাপ্তি ঘটিয়েছি। আমরা সিরিয়ার জন্য নতুন যুগের সূচনা ঘোষণা করছি।
 
প্রসঙ্গত, বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন।
 
তবে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
 
যদিও ২০১৫ সালে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া। সে বছর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এরপর বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
 
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এবং ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার ব্যস্ত থাকার সুযোগে বিদ্রোহীরা আবারও তৎপর হয়ে উঠে। এরই একপর্যায়ে সম্প্রতি বিদ্রোহীরা হামলা শুরু করে এবং এই হামলার মুখে নাটকীয়ভাবে দামেস্ক ছেড়ে পালালেন প্রেসিডেন্ট আসাদ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.