
দেশের জনগণ পরিবর্তন চায় উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ পরিবর্তন চায়। আর স্বপ্ন কিংবা প্রতিশ্রুতি নয়, জনগণ এবার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন চায়।’ বিএনপি জনগণের সেই আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে আগামী দিনের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রণয়ন করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এ কথা বলেন। জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও আমার না বলা কথা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল।
অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, শহীদদের সম্মান জানাতে হলে যে প্রত্যাশা নিয়ে তাঁরা রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছেন, তাঁদের সেই প্রত্যাশার বাস্তবায়ন করতে হবে। বিগত সময়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, যাঁরা স্বৈরাচার সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাঁদের ত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে হলে দেশকে সামনে নিয়ে যেতে হবে।
বিএনপি ক্ষমতায় এলে পরিবেশ রক্ষায় ৫ বছরে ২৫ থেকে ৩০ কোটি গাছের চারা লাগানো হবে বলে জানান তারেক রহমান। একই সঙ্গে ক্ষমতায় এলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয় কর্মসূচি হিসেবে পরিচিত খাল খনন কর্মসূচি পুনরায় শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি। জনগণই বিএনপির সব ক্ষমতার উৎস বলে উল্লেখ করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

যুবদলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করুন। আস্থা অর্জন করতে পারলে আপনি নেতা, জনগণ প্রত্যাখ্যান করলে আপনি নেতা নন।’ বিএনপির বিভিন্ন পরিকল্পনা সারা দেশে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে দলের নেতা–কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তারেক রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট সাইয়্যেদ আবদুল্লাহ, যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়ন প্রমুখ।
এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ যুবদলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চারজন, ২০১৫ সালে গুমের শিকার একজন আইনজীবী এবং যুবদলের রাজনীতি করেন এমন একজন চিকিৎসক বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, দলের চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী ও আবদুস সালাম, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিনসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন যুবদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা।
এর আগে বেলা সাড়ে তিনটায় যুবদল সভাপতির সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। সেখানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত যুবদলের নেতা-কর্মীদের তথ্য তুলে ধরা হয়। পরে একটি ‘থিম সং’ পরিবেশন করা হয়। পরবর্তী সময়ে যুবদলের আয়োজনে সম্প্রতি ঢাকার ছয়টি স্থানে অঙ্কিত গ্রাফিতির ভিজ্যুয়াল প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ যুবদলের ৭৮ জন নেতা, কর্মী ও সমর্থকের পরিবারের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। আর্থিক অনুদান তাঁদের হাতে তুলে দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদেরও পুরস্কার দেওয়া হয়।