আমি পরিশ্রমী মেয়ে, সব চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে রাজি: জেসিয়া ইসলাম

0
34
জেসিয়া ইসলাম

সাত বছর ধরে বিনোদন অঙ্গনে কাজ করছেন জেসিয়া ইসলাম, যার শুরুটা ২০১৭ সালে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে। এরপর চীনে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। এরপর একাধিক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তিনি। এবার তিনি কম্বোডিয়ায় মিস গ্র্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল প্রতিযোগিতায় লড়ছেন। ২৫ অক্টোবর এই আয়োজনের গ্র্যান্ড ফিনালে। তার আগে আজ সোমবার দুপুরে কথা বলেন জেসিয়া। জানান এই আয়োজনসহ অন্যান্য প্রসঙ্গে।

প্রশ্ন: কম্বোডিয়ায় গেলেন কবে?

জেসিয়া ইসলাম : ১ অক্টোবর এসেছি। দুই মাস আগে থেকে পরিকল্পনা চলছিল এই আয়োজন নিয়ে। অবশেষে সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মিস গ্র্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল প্রতিযোগিতায় লড়তে এসেছি।

প্রশ্ন: ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ বিজয়ী হয়ে পরে ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। এবার আপনি অংশ নিলেন ‘মিস গ্র্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল’ প্রতিযোগিতায়। স্বপ্ন কী?

জেসিয়া ইসলাম : এটি আমার তৃতীয় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ। এর আগে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভিয়েতনামে ‘মিস চার্ম’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলাম। এ ধরনের আয়োজনে অংশ নেওয়ার প্রধান উদ্দেশ্যে হলো, আমার বাংলাদেশকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা। আমার অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের নামটাই উচ্চারিত হয়। সবাই যেন বাংলাদেশকে মনে রাখে, এটাই স্বপ্ন।

প্রশ্ন: এই আয়োজন আপনার ক্যারিয়ারে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

জেসিয়া ইসলাম : ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বলতে পারব না। তবে এ ধরনের আয়োজনে বাংলাদেশকে ভালোবেসে আমি অংশ নিই। ৭৫টি দেশের প্রতিযোগীরা আছেন এবারের এই আয়োজনে। সুন্দরী প্রতিযোগিতা ভালো লাগার আরেকটা কারণ হচ্ছে, এখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগী ও ভিন্ন রকম সংস্কৃতির একটা মিলনমেলা হয়। বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়। নিজেদের সেরা প্রমাণের একটা চেষ্টা থাকে। এ রকম পরিবেশ আমি অন্য কোথাও দেখিনি। এটা মানুষ হিসেবে আমাকে অনুপ্রাণিত করে। এ ধরনের সেরা প্ল্যাটফর্ম আর কোথাও আছে বলে মনে হয় না।

জেসিয়া ইসলাম

প্রশ্ন: আপনি তো বাংলাদেশে চেনা মুখ। নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেছেন। এই আয়োজনে ৭৫টি দেশের অন্য যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যেও কি এমন কেউ আছেন?

জেসিয়া ইসলাম : দেশগুলো পরিচিত হলেও প্রতিযোগীরা আমার মতো বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেননি। অংশগ্রহণকারী অনেক দেশ এরই মধ্যে মুকুটও জিতেছে। আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। তবে আমার মতো এ রকম লেভেলের কেউ নেই। আমি মুকুট জয়ের স্বপ্ন দেখছি। একটা অবস্থান গড়তে চাই। বাংলাদেশের নামটা যেন লেখা থাকে, সেই চেষ্টা থাকবে। বিশ্বব্যাপী সবাই এ ধরনের আয়োজন অনুসরণ করে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যদি ভালো পারফরম্যান্স দিই, মানুষ মনে রাখবে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করাটাই আমার লক্ষ্য। আমি এটাও বিশ্বাস করি, যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। তবে মুকুট জিতলে ভালো হয়, না হলেও ইটস ফাইন। চেষ্টা করেই যাব। আমি কখনো থেমে থাকিনি। আমার উদ্দেশ্য, এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দেশের নারীদের অনুপ্রাণিত করা। তাঁদের বলতে চাই, হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। তাই যত দিন পর্যন্ত আমি ক্রাউন বিজয়ী হতে না পারব, তত দিন চেষ্টা করেই যাব।

প্রশ্ন:আপনাকে অভিনয়ে সেভাবে পাওয়া যায়নি। এটা কি আপনার পরিকল্পনার অংশ ছিল নাকি এই দৌড়ে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেননি?

জেসিয়া ইসলাম : ভালো অভিনয়ের জন্য ভালো পরিচালক লাগে। লাগে ভালো টিম, ভালো লেখকও। তারপর ভালো প্রোডাকশন টিম নিয়ে একটা ভালো কনটেন্ট তৈরি হয়। আমি যখন থেকে কাজ করছি, তখন বাংলাদেশে ভালো মুভি অনেক কম তৈরি হয়েছে। ইদানীং আবার ভালো ছবি হচ্ছে যেমন ‘হাওয়া’, ‘পরাণ’, ‘তুফান’। অনেক ছবির ভিড়ে এসব হচ্ছে। এসব ছবি দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরেও দারুণ সাড়া ফেলছে। ভালো পরিচালক কেউ যদি বলেন অডিশন দিতে, আমি কিন্তু মোটেও মাইন্ড করব না। আমি অডিশন দিয়ে হলেও ভালো প্রোডাকশনে কাজ করতে চাই। আমি প্রচণ্ড পরিশ্রমী মেয়ে, সব রকম চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে রাজি আছি। আমার কাছে অভিনয়টা প্যাশন। ক্যামেরার সামনে থাকাটাও আমার প্যাশন। আমি যদি তেমন কোনো সুযোগ পাই, তাহলে কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।

জেসিয়া ইসলাম

প্রশ্ন:বড় পর্দায় কাজ করার ইচ্ছার কথা বলেছিলেন। সে কথা কি ইচ্ছার মধ্যেই থাকবে?

জেসিয়া ইসলাম : ইচ্ছা তো আছেই। সেই ইচ্ছার কারণেই মাঝখানে অভিনয় কর্মশালাও করেছি। একটি সুযোগও যদি পাই, তাহলে নিজেরা সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে পারবই। আমার শুধু একটাই চাওয়া, একটা ভালো টিম লাগবে, একজন গুণী পরিচালক লাগবে। এর বাইরে কিছু নিয়ে আমার মাথা ঘামানোর ইচ্ছা নেই।

জেসিয়া ইসলাম

প্রশ্ন: মিস ওয়ার্ল্ডের চূড়ান্ত আসরে যাওয়ার আগে কিছু সামাজিক কাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন আপনি। এখনো কি সে রকম কোনো কাজ করার ইচ্ছা আছে?

জেসিয়া ইসলাম : করছি। মাঝখানে বরিশালের জেলেপল্লি ও যৌনপল্লিতে গিয়ে ওখানকার নারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। কী করলে তাঁদের ভালো হয়, জানার চেষ্টা করেছি। এখনো নিয়মিত করছি। আমি এ ধরনের সুযোগ সব সময় কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। সুন্দরী প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বড় একটা দিক হচ্ছে, সামাজিক কার্যক্রমে নিজেকে যুক্ত রাখা যায়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.