আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বুয়েট। আজ বুধবার বুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) এন এম গোলাম জাকারিয়ার সই করা বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। সেটি পরে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ।
বুয়েটের বিবৃতিতে বলা হয়, বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) গ্র্যাজুয়েট প্রকৌশলীদের সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অধিকার সুরক্ষা, সুসংহত করাসহ সংশ্লিষ্ট গ্রেডে কোটা–সংক্রান্ত বৈষম্য দূর করার দাবিতে কয়েক দিন ধরে বুয়েটসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার বুয়েটের উপাচার্য ও সহ–উপাচার্য সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান। এরই ধারাবাহিকতায় বিএসসি ডিগ্রিধারী ও ডিপ্লোমাধারীদের পেশাগত দাবিগুলোর যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য আজ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আজ বুয়েটসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উল্লিখিত দাবিদাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যেতে চাইলে পুলিশ তাঁদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে ও লাঠিচার্জ করে। এতে অনেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।
পুলিশের এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের বদলে পুলিশের এ ধরনের হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বুয়েট প্রশাসন পুলিশের এ আচরণে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ, মর্মাহত এবং এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
যথাযথ তদন্ত করে হামলার ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বুয়েট প্রশাসন এমনটাই আশা করছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নামের আগে প্রকৌশলী লিখতে না দেওয়া, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কাউকে পদোন্নতি দিয়ে নবম গ্রেডে উন্নীত না করা এবং দশম গ্রেডের চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্নাতক প্রকৌশলীদের সুযোগ দেওয়া—এই তিন দফা দাবিতে গতকাল পাঁচ ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। আজ তাঁদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হলো ‘লংমার্চ টু ঢাকা’। এর অংশ হিসেবে বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা শাহবাগের মূল সড়কে অবস্থান নেন। এতে বন্ধ হয়ে যায় শাহবাগ ও আশপাশের সড়ক।
বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা যমুনা অভিমুখে রওনা দেন। তাঁরা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের মোড় পেরোনোর চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি, পুলিশের হামলায় ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, পুলিশকে লক্ষ্য করে শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল ছোড়েন। এ ঘটনায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।