আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন সাবেক সিইসি নূরুল হুদা

0
21
সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদা

দিনের ভোট রাতে করাসহ প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে করা মামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) জিয়াদুর রহমান এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে নূরুল হুদাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, চার দিন রিমান্ড শেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে আজ দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় হাজির করা হয়। পরে তাঁর ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান।

আবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিনের ভোট রাতে করে ব্যালট বাক্স ভর্তি রাখার ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন নূরুল হুদা। তিনিসহ অন্য নির্বাচন কমিশনাররা জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে সংবিধানপরিপন্থী কাজ করেছেন। নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের দ্বারা দিনের ভোট রাতে করে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়। আর ভোটের দিন আওয়ামী লীগ ও তাঁদের সহযোগী অঙ্গসংগঠনের ক্যাডারদের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করিয়ে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নূরুল হুদার নির্দেশে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা ভোটকেন্দ্রে বিএনপি ও ঐক্য ফ্রন্টের প্রার্থী ও সমর্থকদের প্রবেশ করতে বাধা দেন।

এই আবেদন করার পর বেলা দুইটার দিকে নূরুল হুদাকে বিচারকের খাস কামরায় নেওয়া হয়। সেখানে রাত সাতটা পর্যন্ত তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

গত ২২ জুন সন্ধ্যার দিকে ‘মব’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিশৃঙ্খলা) তৈরি করে নূরুল হুদাকে হেনস্তার পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়। রাজধানীর উত্তরার বাসায় ঢুকে একদল লোক তাঁকে বের করে আনেন, জুতার মালা পরিয়ে দেন। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ জানায়, বিএনপির করা একটি মামলায় নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

উল্লেখ্য, সেদিনই বিএনপি রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি করে। মামলায় সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে দিনের ভোট রাতে করাসহ প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ আনা হয়। পরের দিন সাবেক এই সিইসির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।

নূরুল হুদা প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকাকালে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই ভোটে আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখার অভিযোগ রয়েছে, যা পরে ‘রাতের ভোট’ নামে পরিচিতি পায়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.