সুদানে চলমান সংঘাতের কারণে দেশটির রাজধানী খার্তুম থেকে বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুরে ১৩টি বাসে ৬৫০ জন বাংলাদেশি পোর্ট সুদানের পথে রয়েছেন। সেখান থেকে সৌদি আরবের নৌবাহিনীর জাহাজে তাঁদের সৌদি আরবের জেদ্দায় নেওয়া হবে।
আজ বুধবার তারা পোর্ট সুদানে পৌঁছাবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। এ বিষয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি বলেন, ‘৬৫০ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে বাসগুলো খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো তারা পার হয়ে গেছেন। ইনশাআল্লাহ স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে ভোরের মধ্যে সকলে গন্তব্যে পৌঁছাবেন বলে আশা করা যায়।’
এদিকে খার্তুমে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর দেশটির সরকার তাঁদের থাকার জন্য হোটেলের ব্যবস্থা করেছে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফ্লাইটে করে তাঁদের দেশে ফেরানো হবে। এ ক্ষেত্রে যাঁদের কাছে পাসপোর্ট আছে, তাঁরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে; আর যাঁদের পাসপোর্ট নেই, তাঁদের ট্রাভেল পারমিট দিয়ে পাঠানো হবে। বাংলাদেশ বিমান প্রস্তুত রয়েছে। বিমানের মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক ফ্লাইট রয়েছে, এর মাধ্যমে তাঁরা দেশে আসতে পারবেন। বিশেষ ফ্লাইট লাগলে সেটারও ব্যবস্থা রয়েছে।
গত ১৫ এপ্রিল উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এসএএফ এবং আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। তিন সপ্তাহ ধরে চলা ভয়াবহ সংঘর্ষে এ পর্যন্ত কয়েকশ মানুষ নিহত হয়েছেন। সুদানের ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এ লড়াইয়ে খার্তুম ও আশপাশের আবাসিক এলাকাগুলো পরিণত হয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে।
বন্ধ হয়ে গেছে হাসপাতাল ও অন্যান্য পরিষেবা। রাজধানীতে আটকা পড়ে আছে লাখো মানুষ। ফুরিয়ে আসছে খাদ্য।
সরকারি হিসাবে, সুদানে দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। পরিস্থিতির ক্রম অবনতি ঘটায় বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে প্রায় ৭০০ বাংলাদেশি দেশ ছাড়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। তাই তাঁদের সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
চলমান সংঘাতের মধ্যে ৮ লাখের বেশি মানুষ সুদান ছাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা। এর মধ্যে দেশটিতে অস্থায়ীভাবে বসবাসকারী হাজার হাজার শরণার্থীও রয়েছে।