হাটের ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় হাট ইজারাদার ও আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতিসহ ২০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে মামলাটি করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম।
এ ঘটনায় রাতেই ছাত্রলীগের ওই নেতাসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তিনজন গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলার ঝলমলিয়া এলাকায় কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটে।
জখম হওয়া ব্যক্তি হলেন নাজমুল হোসেন (৪৫)। তিনি পুঠিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলামের ছেলে। নাজমুল ঝলমলিয়া হাটের ইজারাদার।
গ্রেপ্তার তিন আসামি হলেন পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. সাকিবুর রহমান মিঠু (৩০), ঝলমলিয়া এলাকার মো. নিয়ামুল হক জুয়েল (৩৫) ও মো. রিপন (২৮)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঝলমলিয়া হাটের ইজারা নেওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে নাজমুল হোসেনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন আসামিরা। গতকাল রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে নাজমুল মোটরসাইকেলে করে ঝলমলিয়া বাজারে আসার পথে মধুখালী ব্রিজের উত্তর পাশে আসামিরা হাঁসুয়া, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, রামদা ও ছোরা নিয়ে হাজির হন। এ সময় আসামি মো. আহসান উল হক মাসুদ হুকুম দিয়ে বলেন, ‘তোকে আজ পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে, নইলে আজ তোকে খুন করে লাশ গুম করে দেব।’ একপর্যায়ে তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে নাজমুলের শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপাতে থাকেন। সাকিবুর রহমান তাঁর হাতে থাকা ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে বাঁ হাঁটুর ওপরে কোপ দেন। পরে স্থানীয় লোকজন নাজমুলকে উদ্ধার করে প্রথমে পুঠিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহারে ২০ জন আসামিকে কীভাবে আঘাত করেছেন, তার বর্ণনা দেওয়া আছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত পয়লা বৈশাখে ঝলমলিয়া হাটের ইজারা দেওয়া হয়। সরকারিভাবে ডাকে ইজারা পান নাজমুল হোসেন। হাট ইজারা পাওয়ার পর থেকেই নাজমুলের সঙ্গে সাকিবুর রহমানের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। সেই দ্বন্দ্বের জেরে গতকাল বিকেলে নাজমুলকে কোপানো হয়েছে। এর আগে ইজারা পেয়ে হাট পরিচালনা করতেন ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুর রহমান নেতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
এ বিষয়ে নাজমুলের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে নাজমুল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হতে পারে। সেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, ঘটনার পর গতকাল রাতেই তিনজনকে আটক করা হয়। পরে আজকের করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে রাজশাহী আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।