বিএনপির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান বলেছেন, ‘যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তা আজ ভুলুণ্ঠিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ছিল- সাম্য, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেগুলো ধ্বংস করেছে। কারণ আওয়ামী লীগ কখনোই এগুলো মানে না।’
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী ও বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দেশপ্রেমিকের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহমেদ আযম খান বলেন, ‘আমি নিজে জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছি, যা তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে তার বইতে লিখেছেন। আজকে দেশের মানুষ যখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ছে, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে তখনই একটি গোষ্ঠী জিয়াউর রহমান, তার সহধর্মিণী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তাদের ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের চরিত্র হনন করতে ষড়যন্ত্র করছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলছে। প্রকৃতপক্ষে তাদের কোনো রাজনৈতিক চরিত্র নেই। তারা নোংরা ভাষায় কথা বলে। কই আমরা তো কোনো নেতাকে নিয়ে কটূক্তি করি না। কারণ আমরা জিয়াউর রহমানের কর্মী। আমরা জাতীয়তাবাদী দলের কর্মী। আমরা জানি প্রতিপক্ষকে নিয়ে কীভাবে কথা বলতে হয়।’
সিনিয়র এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত যত অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ড সবই আওয়ামী লীগ করেছে। কারণ তারা তো মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্রকে বিশ্বাস করে না। তারা শুধু এসবের নামে সুবিধা নিয়ে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘গুম, খুন, অত্যাচার নির্যাতন ও হামলা মামলা দিয়ে আমাদের আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে সরকার। আমাদের অর্ধকোটি নেতাকর্মী ক্ষমতাসীনদের হামলা মামলায় পর্যুদস্ত। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অনেকেই নিঃস্ব। বিএনপির দশ লাখ নেতাকর্মীর পরিবার নানাভাবে সর্বশান্ত হয়ে গেছে।’
আহমেদ আযম খান বলেন, ‘আমরা ক্ষমতার জন্য নয়, দেশটাকে বাঁচানোর জন্য লড়াই সংগ্রাম করছি। আজকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সারাদেশে কোটি কোটি মানুষ জেগে উঠেছে। তিনি দশ দফা এবং রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফা ঘোষণা করেছেন। এসব দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আসুন সবাই মিলে চলমান শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বেগবান করি। দেশপ্রেমিক সবাইকে আজকে মাঠে নামতে হবে। যেমনটি ইয়ূথ ফোরামের নেতৃত্বে ১৫টি সংগঠন ঐক্যবদ্ধ জোট করেছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে ইনশাআল্লাহ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নিতে বাধ্য হবে। তারা পালানোর পথ পাবে না।’
ইয়ূথ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরীর পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, অ্যাডভোকেট মাইনুদ্দিন মজুমদার, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের এম জাহাঙ্গীর আলম, জাতীয়তাবাদী নাগরিক দলের শাহজাদা ওমর ফারুক, মৎস্যজীবী দলের ইসমাইল হোসেন সিরাজী, দেশ রক্ষা মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের আজিজা সুলতানা, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিলের শেখ আলিম উল্লাহ আলিম, সাইফুল ইসলাম শুভ, ইয়ূথ ফোরামের মাহমুদুল হাসান শামীম, কমর উদ্দিন লিটন প্রমুখ।