
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করতে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা শহরের দেওভোগ এলাকায় তাঁর নতুন বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ খবর পেয়ে আইভীর সমর্থকেরা বাড়িটির সামনে অবস্থান নিয়েছেন। দুটি সড়কের ১০–১৫টি পয়েন্টে বাঁশ দিয়ে অবরোধ করেছেন তাঁরা।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে নারী-পুরুষ–শিশুদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে দেওভোগ এলাকায় আইভীর পুরোনো বাড়ির সামনে কয়েক পুলিশ সদস্য অবস্থান নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) হাসানুজ্জামানের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিনসহ অন্তত ৫০ জন পুলিশ সদস্য আইভীর দেওভোগের নতুন বাড়িতে যান। এ সময় ওসি ও নারী পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন পুলিশ সদস্য বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন। আইভীর সমর্থকেরা দেওভোগ ও বাবুরাইল এলাকার মসজিদের মাইকে পুলিশ আসার খবর ঘোষণা করে সবাইকে ঘটনাস্থলে এসে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। এরপর তাৎক্ষণিক ওই বাড়ির সামনে তাঁর সমর্থকেরা জড়ো হন এবং আইভীর পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদি আইভীর পুরোনো বাড়ির সামনে অবস্থানরত বিক্ষুব্ধ মানুষদের উদ্দেশে হ্যান্ডমাইকে বলেন, ‘তাঁর (আইভী) বিরুদ্ধে মামলা আছে। আমরা তাঁকে নিয়ে যাব। আপনারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে কোনো লাভ হবে না। আপনারা যদি অবস্থান করেন করতে পারেন, আমরাও এখানে অবস্থান করব এবং তাঁকে নিয়ে যাব।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা মডেল থানায় ছয়টি মামলা আছে। এসব মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করতে তাঁর নারায়ণগঞ্জের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

আইভীর মামাতো ভাই রেজাউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ আইভীকে গ্রেপ্তার করতে এলে এলাকার লোকজন রাস্তায় অবস্থান নিয়ে পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। বাড়ির ভেতরে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি নাছির আহমেদসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য অবস্থান করছেন।

আইভীর বাড়িতে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি।
তবে বাড়ির ভেতরে থাকা এক পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশের না করার শর্তে জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা জানতে পারেন, আইভীর বাড়িতে অভিযান চালাতে হবে। অন্তত ৫০ জন নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্য নিয়ে তাঁরা ওই বাড়িতে যান। এর ১০ মিনিটের মধ্যেই মসজিদের মাইকে আইভীর বাড়িতে পুলিশ এসেছে বলে ঘোষণা করা হয়। তিনি বলেন, ‘তখনই আমরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ি।’