জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করে যারা আহত হয়েছে, তাদের নিয়ে কাজ করা রাজনৈতিক দলগুলোর কর্তব্য বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতার সঙ্গে ছয় উপদেষ্টার বৈঠক শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা পরিষদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে আহতদের রাস্তায় নামা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, এটা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। অভ্যুত্থানে যারা আহত এবং যারা শহীদ—তারা কিন্তু শুধু সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত না। তারা রাষ্ট্র এবং জাতির সঙ্গে সম্পর্কিত। তাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান করা দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের কর্তব্য। বর্তমান সরকারের দিক থেকে সেটা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি— রাজনৈতিক আলাপে ও কথাবার্তায় এবং মিডিয়ায় তাদের কথাবার্তা কম ফোকাস করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখানে কোনো সরকারের নির্দেশনার বিষয় ছিল না। শহীদ ও আহতদের নিয়ে কাজ করা রাজনৈতিক দলগুলোর কর্তব্য। সর্বোপরি এটা আমাদের জাতীয় কর্তব্য। এই কর্তব্যে যেন কেউ অবহেলা না করি। বর্তমান সরকারই তাদের সুযোগ-সুবিধাগুলো নিশ্চিত করতে পারবে। এই বিশ্বাস আমাদের সবার আছে। সেই বিষয়টা তারা বারবার চাচ্ছে। কারণ, নির্বাচন বলে রাজনৈতিক আলাপ আনা হয়, যেটা সবার ভেতরে এক ধরনের অনাস্থা তৈরি করছে।
নাহিদ আরও বলেন, যখন শহীদ ও আহতদের কথা জাতীয় পরিসরে আলোচনায় থাকা উচিত ছিল, তখন সবাই শুধু সরকারের ওপর দায় চাপিয়ে দিয়ে বাকিরা নির্বাচন ও অমুক-তমুক বলার চেষ্টা করছে। তাই সবার কাছে আহ্বান জানাবো—আমরা সবাই যেন শহীদ পরিবার ও আহতসহ তাদের পরিবারের প্রতি, সরকারি ও বেসরকারি জায়গা থেকে ফোকাস দেই।
আহতদের চিকিৎসাসেবার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ একটি টাইম লাইন দেওয়া হলো—পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে একটি রূপরেখা দেওয়া হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে স্বল্প মেয়াদের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই। একইসঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদের সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে উদ্যোগ শুরু হবে।
এর আগে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মো. নাহিদ ইসলাম ছাড়াও স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। এতে আরও অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, আন্দোলনে শহীদ মুগ্ধর ভাই ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। বৈঠকে শতাধিক আহত ছাত্র-জনতা উপস্থিত ছিলেন।