জিসান বলেন, ‘বাবা কী রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, আমরা কিছুই জানতে পারিনি। হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’ এরপর আর কথা বলতে পারেননি জিসান, কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। খালেকুজ্জামানের মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিকেতনের বাসায় নেওয়া হবে। বিকেল চারটায় নিকেতন মসজিদে জানাজা হবে। এরপর মরদেহ নরসিংদীর গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে।
গুণী এই শিল্পীর জন্ম ১৯৫০ সালে। তাঁর বাবা শামসুজ্জামান ছিলেন ব্রিটিশ রেলওয়ের মেডিকেল অফিসার। মা শায়েস্তা আক্তার জামান ছিলেন গৃহিণী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে নাট্য ও চারুকলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। কণ্ঠশিল্পী সুলতানা মমতাজ তাঁর সহধর্মিণী। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৩০০ নাটকে অভিনয় করেছেন খালেকুজ্জামান। ১৯৭৫ সালে বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হন তিনি। নওয়াজেশ আলী খানের প্রযোজনায় ‘সর্পভ্রমে রজ্জু’ নাটক দিয়ে বিটিভিতে অভিনয় শুরু করেন খালেকুজ্জামান। এরপর ‘তমা’, ‘বড় বাড়ি’, ‘সময় অসময়’, ‘সুবর্ণ সময়’সহ বহু নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি।
‘বড় ছেলে’, ‘বৃহন্নলা’, ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ ও ‘দেবী’সহ বেশ কয়েকটি আলোচিত নাটক-সিনেমায় তিনি অভিনয় করেন। টিভি নাটকের পাশাপাশি মঞ্চনাটকেও সরব ছিলেন। অর্ধশতাধিক চলচ্চিত্রেও পাওয়া গেছে তাঁকে। নায়করাজ রাজ্জাক ও কবরীর সঙ্গে কামাল আহমেদ পরিচালিত ‘অনির্বাণ’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
নাট্যাঙ্গনে সহকর্মীদের কাছে প্রিয় ছিলেন এই প্রবীণ অভিনেতা। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে বিনোদন অঙ্গনে। অনেকে ফেসবুকে ছবি দিয়ে শোক প্রকাশ করেন। অভিনেত্রী তানভীন সুইটি লিখেছেন, ‘তিনি অনেক ভালো মনের একজন মানুষ ছিলেন। সব সময় হাসি থাকত তাঁর মুখে, এত ভালো ব্যবহার ছিল তাঁর…।’
নির্মাতা সানী সানোয়ার লিখেছেন, ‘ওনার সাথে একটা কাজ (মিশন এক্সট্রিম-১) করার সুযোগ দিয়েছিলেন। অসম্ভব ভালো একজন মানুষ এবং অভিনেতা। খুব খারাপ লাগছে শুনে যে উনি নেই।’ নিকুল কুমার মণ্ডল প্রয়াত এই অভিনেতাকে ‘নিপাট ভদ্রলোক ও ভালো শিল্পী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।