লর্ডসে সেদিন আর কী কী ঘটেছিল!
জনি বেয়ারস্টোর স্টাম্পিং নিয়ে অ্যাশেজ সিরিজে ধুন্ধুমার চলছে। ইংল্যান্ডের এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান আউট হলেও সেটি ক্রিকেটীয় চেতনা মেনে কি না—এই বিতর্ক লর্ডসের মাঠ থেকে ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার সরকারপ্রধানদের দপ্তরেও। ১৯৩২ সালে সেই কুখ্যাত বডিলাইন ঘটনার পর অ্যাশেজ সিরিজে আর কোনো ইস্যু নিয়ে এই মাত্রার বিতর্ক দেখা যায়নি। বেয়ারস্টোর আউট ইংলিশদের এতটাই ক্ষুব্ধ করেছে যে লর্ডসের লংরুমে বসে খেলা দেখা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) ‘আপাতপরিশীলিত’ ভদ্রলোকদেরও ভদ্রতার মুখোশ খসে পড়েছে। বেয়ারস্টোর সেই বিতর্কিত আউটের পর লংরুম পেরিয়ে মধ্যাহ্নবিরতির জন্য ড্রেসিংরুমে ফেরত অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়েছেন তাঁরা। পুরো ব্যাপারই এমন এক জায়গায় পৌঁছেছে যে এমসিসিকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে, শাস্তি দিতে হয়েছে ওই ঘটনায় জড়িত থাকা সদস্যদের।
বেয়ারস্টোর আউট নিয়ে কথা বললেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীও
লর্ডস টেস্টের পঞ্চম দিনে সবার দৃষ্টির আড়ালে আরেকটি ঘটনাও ঘটেছে। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য অস্ট্রেলিয়ান জানিয়েছে, বেয়ারস্টোর আউটের পর ইংলিশ দর্শকেরা এতটাই মারমুখী হয়ে উঠেছিলেন যে তাঁদের গালাগালির কারণে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথের মা-বাবা গ্যালারি ছাড়তে বাধ্য হন। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইংল্যান্ডের দর্শকেরা স্টিভেন স্মিথের মা-বাবাকে চিনতে পারেনি। ‘অস্ট্রেলিয়ান’ হিসেবেই তাঁদের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছিল। ঘটনা এখানেই থামেনি, অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের একজন স্টাফের ১১ বছর বয়সী ছেলেকেও ‘অস্ট্রেলিয়ান’ বলে গালিগালাজ শুনতে হয়েছে। ১১ বছরের বাচ্চা ছেলেটি ইংলিশ দর্শকদের মুখ থেকে ধেয়ে আসা গালি হজম করে উঠতে পারেনি। একপর্যায়ে সে কেঁদেই ফেলে।
বেয়ারস্টোর আউট নিয়ে লর্ডসে উত্তাপ
ক্রিকেট দল স্বাগতিক ক্রিকেট বোর্ডের কাছে অতিরিক্ত নিরাপত্তাও চেয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান দল লর্ডসের লংরুমে এমসিসির কিছু সদস্যের আচরণ সামনে নিয়ে এসেছিল এক বিবৃতি দিয়ে। তারা বিনয়ের সঙ্গেই এমসিসিকে পুরো ঘটনার তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়েছিল।
এদিকে হেডিংলি টেস্ট শুরুর আগে ইংলিশরাও সম্ভবত বুঝতে পারছে যে লর্ডসে সবকিছু একটু ‘বেশি বেশি’ হয়ে গেছে। সে কারণে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস ভক্ত ও সমর্থকদের সতর্ক করে দিয়েছেন এ-ই বলে, ‘আপনারা সবাই আপনাদের দেশকে সমর্থন দিতে আসেন। এর চেয়ে বেশি কিছু করার দরকার আছে বলে আমার মনে হয় না।’
স্টার্কের ক্যাচকে বৈধতা না দেওয়ায় পন্টিং–ম্যাকগ্রাদের ক্ষোভ, ব্যাখ্যা দিল এমসিসি
লর্ডসের বিতর্কিত ঘটনাগুলোর জের লিডসের হেডিংলিতে তৃতীয় টেস্টেও টেনে নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলে শঙ্কা আয়োজক ক্রিকেট বোর্ডের। হেডিংলি মাঠের মালিকানা ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের। তারা টেস্ট শুরুর আগে নিরাপত্তাব্যবস্থার ফাঁকফোকরগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ার পুলিশের সঙ্গে তারা বৈঠকও করেছে।
এখন হেডিংলিতে নতুন কোনো কিছু ঘটবে কি না, সেটিই দেখার বিষয়!