২০১১ সালের কথা। সাজ্জাদ হোসেনের বয়স তখন সাত বছর। পরিবারে অনেক অর্থকষ্ট। মা জোহরা বেগম বাধ্য হয়ে ঢাকায় গিয়ে পোশাক কারখানায় চাকরি নিলেন। দুই শিশুসন্তানকে (সাজ্জাদ ও তাঁর বোন) রেখে গেলেন বাড়িতে স্বামীর কাছে।
জোহরা বেগমের পাঠানো টাকায় চলত দুই সন্তানের পড়াশোনার খরচ। অষ্টম শ্রেণিতে ওঠার পর থেকে সাজ্জাদ হোসেন নিজেও গ্রামে টিউশনি করতেন। এভাবে অতিদারিদ্রে৵র মধ্যেও পড়াশোনা করে ২০২০ সালে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লালবাড়ী দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পান সাজ্জাদ হোসেন।
এরপর সাজ্জাদের পাশে দাঁড়ায় ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল’। তিনি এই তহবিল থেকে শিক্ষাবৃত্তি পেতে শুরু করেন। পরে এইচএসসি পরীক্ষায় রংপুর সরকারি সিটি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পান তিনি।
এবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন সাজ্জাদ হোসেন। ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তবে বুয়েটে ভর্তি হতে চান সাজ্জাদ। ‘ব্র্যাক ব্যাংক- ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল’ থেকে আগামী চার বছর তাঁকে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হবে।
সাজ্জাদ হোসেনের বাড়ি বদরগঞ্জ উপজেলার বুজরুক হাজীপুর মৃধাপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা আজিবর রহমানের বসতবাড়ি ছাড়া আর কোনো জমি নেই।
প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে ভালো মানুষ হতে চান জানিয়ে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘দাখিল পাসের পর কলেজে ভর্তি ও পড়াশোনার টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম। তখন ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল এগিয়ে এসে আমাকে শিক্ষাবৃত্তি দেয়। এতে আমার সাহস বেড়ে যায়।’
সাজ্জাদ হোসেনের মা জোহরা বেগম এখনো ঢাকায় চাকরি করেন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘আপনারা পাশে আছেন বলেই, আমার ছেলেটা পড়তে পারছে। আপনাদের কাছে আমি ঋণী।’