
প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ডলারে বিক্রি হলো ফ্রিদা কাহলোর একটি চিত্রকর্ম। এর মধ্য দিয়ে নতুন রেকর্ড গড়লেন মেক্সিকোর এই চিত্রশিল্পী। নারীদের তৈরি শিল্পকর্মের মধ্যে নিলামে বিক্রিতে এটিই এখন সবচেয়ে বেশি দামি।
নিউইয়র্কে নিলাম প্রতিষ্ঠান সথবি’স ফ্রিদা কাহলোর ‘এল সুয়েনঞ (লা কামা)’ চিত্রকর্মটি নিলামে তুলেছিল। স্প্যানিশ ভাষা থেকে ইংরেজি করলে এর নাম দাঁড়ায় ‘দ্য ড্রিম (দ্য বেড)’, আর বাংলায় ‘স্বপ্ন (শয্যা)’।
পরাবাস্তববাদী চিত্রকর্মটি এক ব্যক্তিগত সংগ্রাহকের পক্ষ থেকে নিলামে তোলা হয়েছিল। এর ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছিল ৪ কোটি থেকে ৬ কোটি ডলারের মধ্যে। নিলামে দাম ৫ কোটি ৪৭ লাখ ডলার ওঠে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সাড়ে ছয় শ কোটি টাকার বেশি।
এ মধ্য দিয়ে মার্কিন শিল্পী জর্জিয়া ও’কিফের চিত্রকর্মের দামের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেল। ও’কিফের ‘জিমসন উইড/হোয়াইট ফ্লাওয়ার নাম্বার ওয়ান’ নামের চিত্রকর্মটি ২০১৪ সালে ৪ কোটি ৪৪ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল। একসময় হোয়াইট হাউসেও ছবিটি টানানো ছিল।
ফ্রিদা কাহলোর আঁকা ‘দিয়েগো ওয়াই ইয়ো’ (দিয়েগো ও আমি) চিত্রকর্মটি এর আগে নারীদের শিল্পকর্মের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মূল্যের চিত্রকর্ম হিসেবে স্বীকৃত ছিল। ২০২১ সালে সথবি’স আয়োজিত নিলামেই তা বিক্রি হয়েছিল। তখন লাতিন আমেরিকার শিল্পকর্মের মধ্যে সবচেয়ে দামি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল সেটি।
নিউইয়র্কে নিলাম প্রতিষ্ঠান সথবি’স আয়োজিত নিলামে এ চিত্রকর্মের দাম উঠেছে ৫ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। যা প্রয়াত মার্কিন শিল্পী জর্জিয়া ও’কিফের চিত্রকর্মের দামের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। ও’কিফের ‘জিমসন উইড/হোয়াইট ফ্লাওয়ার নাম্বার ওয়ান’ নামের চিত্রকর্মটি ২০১৪ সালে ৪ কোটি ৪৪ লাখ ডলার দামে বিক্রি হয়েছিল।
এ ক্ষেত্রে ফ্রিদা কাহলো নিজের রেকর্ডই ভেঙেছেন। ‘এল সুয়েনঞ (লা কামা)’ চিত্রকর্মটি বিক্রির পর লাতিন আমেরিকান অঞ্চলে দামি চিত্রকর্মের তালিকায় ‘দিয়েগো ওয়াই ইয়ো’ দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেছে। আর বিশ্বের মধ্যে এখন তৃতীয়।

‘এল সুয়েনঞ (লা কামা)’ প্রায় তিন দশক পর্যন্ত জনসমক্ষে আসেনি। এবার নিলামের আগে ছবিটি লন্ডন, আবুধাবি, হংকং, প্যারিস ও নিউইয়র্কে প্রদর্শিত হয়।
চিত্রকর্মটিতে ফ্রিদা কাহলোকে একটি খাটে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। সবুজ লতাপাতা ঘিরে রেখেছে তাঁকে। দেখে মনে হবে, খাটটি হালকা নীল রঙের আকাশে ভেসে আছে। খাটের ওপরের ছাদে ফ্রিদা বরাবর একটি কঙ্কাল শোয়ানো। তাতে তারের সঙ্গে ডিনামাইট বাঁধা। কঙ্কালটির কোলে শুকনো ফুলের একটি তোড়া।
ফ্রিদা কাহলোর কাজের একটি নিয়মিত মোটিফ ছিল খাট। একটি বাস দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া ফ্রিদার শরীরে বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল এবং তাঁকে জীবনভর শরীরে ব্যথা বয়ে বেড়াতে হয়েছে। এর জন্য ফ্রিদা কাহলোকে দীর্ঘ সময় খাটে শুয়ে কাটাতে হয়েছিল।
ফ্রিদা কাহলোর কাজের একটি নিয়মিত মোটিফ ছিল খাট। একটি বাস দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া ফ্রিদার শরীরে বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল। ৪৭ বছর বয়সে ১৯৫৪ সালে মৃত্যুর আগে জীবনভর শরীরে ব্যথা বয়ে বেড়াতে হয়েছিল তাঁকে।
দীর্ঘ সময় খাটেই শুয়ে কাটাতে হতো ফ্রিদা কাহলোকে। যেন খাটে শুয়ে শুয়েই ছবি আঁকতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে তাঁর পরিবার খাটের সঙ্গে বিশেষ ব্যবস্থা যুক্ত করে দিয়েছিল। ওই সময় তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি মরিনি এবং আমার বেঁচে থাকার একটি কারণ আছে। সেই কারণ হলো চিত্রকলা।’
















