সাবেক মেয়র আরিফুলকে সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী করছে বিএনপি

0
19
সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী

সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে অবশেষে সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে প্রার্থী করছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত তথ্য বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন আরিফুল হক নিজেই।

সিলেট-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন আরিফুল হক। গতকাল বুধবার রাতে আরিফুল হক বলেন, দলের উচ্চপর্যায় থেকে তাঁকে সিলেট-১-এর পরিবর্তে বেশ কয়েকবার সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য বললেও তিনি রাজি হননি। গতকাল রাতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাঁকে সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হতে নির্দেশনা দেন। এ নির্দেশ অমান্য করার সুযোগ নেই।

বিএনপি গত সোমবার জাতীয় সংসদের ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। সিলেট জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে সিলেট-১ আসনে প্রার্থী করা হয় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রতিদ্বন্দিতাকারী খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরকে। আর যে দুটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি, এগুলো হচ্ছে সিলেট-৪ ও সিলেট-৫ (কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ)।

সাবেক মেয়র আরিফুলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন না পেয়ে আরিফুল আশাহত হন। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার দলের উচ্চপর্যায় থেকে তাঁকে ঢাকায় জরুরি তলব করা হয়। পরে গতকাল রাত নয়টার দিকে তিনি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর বাসভবনে দেখা করার ডাক পান।

চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করার সময় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও আরিফুল হকের মুঠোফোনে আলাপ হয়। এ সময় চেয়ারপারসন আরিফুলকে সিলেট-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নির্দেশ দেন। বিষয়টি দ্রুত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দল জানাবে।

চেয়ারপারসন আমাদের জাতীয় মুরব্বি। তাঁর নির্দেশে আমি সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করতে সম্মত হয়েছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। সিলেট-৪ আসনের মানুষের ভালোবাসা নিয়েই আমি নির্বাচনী মাঠে নামব।

আরিফুল হক চৌধুরী

আরিফুল বর্তমানে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে আছেন। এর আগে তিনি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া তিনি সিলেট জেলা বিএনপির সদস্য। এর আগে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন একসময়ের ছাত্রদলের প্রভাবশালী এই নেতা।
বিএনপির মনোনয়নে আরিফুল টানা দুই মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়ে সিলেটে অনেক উন্নয়নকাজ করেছেন। দলমত–নির্বিশেষে সব মহলের কাছে তাঁর একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আরিফুলকে অংশ নেওয়ার জন্য দলের বাইরের ভোটারদের চাপ ছিল। তবে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি।

যোগাযোগ করলে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘চেয়ারপারসন আমাদের জাতীয় মুরব্বি। তাঁর নির্দেশে আমি সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করতে সম্মত হয়েছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। সিলেট-৪ আসনের মানুষের ভালোবাসা নিয়েই আমি নির্বাচনী মাঠে নামব। দলের প্রয়োজনে আমি বারবার নির্দেশ পালন করে আসছি। এখনো সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করার আদেশ মাথা পেতে মেনে নিয়েছি।’

এদিকে স্থানীয় বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, সিলেট-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন অনেকে। এর মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপির দুবারের সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরী, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা হেলাল উদ্দিন আহমদ, বিএনপি-দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিমের স্ত্রী জেবুন্নাহার সেলিম, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সহস্বেচ্ছাসেবক–বিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জামান জামান উল্লেখযোগ্য।

আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করছেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন। জৈন্তাপুর উপজেলার সাবেক এই চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবেও শক্তিশালী।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.