রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের বাধায় দলটির সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেছে। আজ শনিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। জাতীয় পার্টির দাবি, এ ঘটনায় তাদের কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
পুলিশের ভাষ্য, মৌখিকভাবে জাতীয় পার্টিকে বলা হয়েছিল রাস্তা দখল না করে কর্মসূচি পালন করতে। কিন্তু তারা রাস্তার ওপর চেয়ার বসিয়ে মঞ্চ স্থাপন করে। কয়েকবার তাদের সতর্ক করার পরও শোনেনি। অন্যদিকে দলটির দাবি সম্পূর্ণ অযাচিতভাবে সমাবেশ ভন্ডুল করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে এমনটা করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা কাকরাইলের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছেন। তখন পুলিশ তাঁদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে। এ সময় পুলিশ জলকামান থেকে পানি ছুড়ে ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।
বিকেল সাড়ে চারটার দেখা যায় কার্যালয়ের ফটক বন্ধ। সামনে পুলিশ অবস্থান করছে। সমাবেশের জন্য আনা চেয়ার-টেবিল সরিয়ে নিচ্ছেন ডেকোরেশনের লোকজন। এদিকে পৌনে পাঁচটার দিকে পুলিশের সামনেই কার্যালয়ের সামনে থেকে দলটির একটি মিছিল বিজয়নগর থেকে পল্টনের দিকে রওনা হয়। এ সময় রাস্তার আরেক পাশ থেকে একটি মিছিল থেকে ৯-১০ জন এসে তাদের ওপর চড়াও হয়। এতে জাতীয় পার্টির একজন আহত হয়। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

জাপার মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ছিল। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ছিল। সম্পূর্ণ অযাচিতভাবে সমাবেশ ভন্ডুল করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে এমনটা করেছে। পুলিশের সংযত আচরণ করা উচিত ছিল। আমাদের বেশ কয়েকজন নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ যেভাবে পেছন থেকে আক্রমণ করেছে, পানি ছিটিয়েছে, তাতে পদদলিত হয়ে অনেক মানুষ মারা যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। পুলিশ দায়িত্বহীন আচরণ করেছে।’

পুলিশের রমনা জোনের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ‘জাতীয় পার্টি আমাদের একটি আবেদন করেছিল, সেটা আমরা গ্রহণ করিনি। এটা তো রাস্তা, আপনারা তো রাস্তায় কর্মসূচি পালন করতে পারেন না। মৌখিকভাবে আমরা তাদের বসছিলাম রাস্তা দখল না করে কর্মসূচি পালন করতে। কিন্তু তারা রাস্তার ওপর চেয়ার বসিয়ে মঞ্চ স্থাপন করে। আমরা তাদের কয়েকবার সতর্ক করেছি, আমাদের পুলিশ কর্মকর্তা রমনা থানার ওসি নিজে গিয়ে তাদের রাস্তা ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তারপরও তারা সরে না গেলে আমরা ছত্রভঙ্গ করার জন্য যা যা করার দরকার ছিল, তা করেছি।’
এর আগে রমনা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে অনুমতি ছাড়াই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। তাই পুলিশ সেখানে সমাবেশ করতে দেয়নি।
এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। গত ৩০ আগস্ট জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা হয়।