
শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মরদেহ আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে আনা হয়েছে। এরপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হবে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
অপরাজেয় বাংলায় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাজিন আজিজ চৌধুরী, ইংরেজি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, সংগীত বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে মনজুরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর জানাজা শেষে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মনজুরুল ইসলামকে দাফন করা হবে।

গতকাল শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ৩ অক্টোবর রাজধানীর ধানমন্ডিতে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে যাওয়ার পথে গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে গাড়িচালক একজনের সহায়তায় তাঁকে পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালে নেন। খবর পেয়ে মাজহারুল ইসলামসহ অন্যরা সেখানে যান। সেখান থেকে তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’ হয়েছে। পরে সেখানে তাঁর হৃদ্যন্ত্রে রিং পরানো হয়।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জন্ম ১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেট শহরে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। পরে তিনি কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে আইরিশ কবি ডব্লিউ বি ইয়েটসের ওপর পিএইচডি করেন।
পেশাগত জীবনে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরের পর তিনি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে (ইউল্যাব) যোগ দেন।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম প্রবন্ধ, গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। তিনি বাংলা কথাসাহিত্যে এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেন, যাতে বাস্তব ও অবাস্তবের তফাত ঘুচে জাদুবাস্তবতার স্পর্শে সামান্য ঘটনাও অসামান্য হয়ে ওঠে। তাঁর ‘প্রেম ও প্রার্থনার গল্প’ ১৪১১ বঙ্গাব্দে (২০০৫ সাল) প্রথম আলো বর্ষসেরা সৃজনশীল বইয়ের পুরস্কার পায়। তিনি ১৯৯৬ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে একুশে পদক পান। সাহিত্য ও নন্দনতত্ত্ব বিষয়েও তাঁর বই রয়েছে।