শান্তিতে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা) নরওয়ের রাজধানী অসলোর নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে এবারের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়।
নোবেল কমিটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে নিরলস প্রচেষ্টা এবং ন্যায্য ও শান্তিপূর্ণভাবে স্বৈরশাসনের উৎখাত করে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রামের জন্য মাচাদোকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
নোবেল শান্তি পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রাউন, যা প্রায় ১২ লাখ ডলারের সমান। আগামী ১০ ডিসেম্বর অসলোতে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।

ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়েছে, এক বছর ধরে আত্মগোপনে আছেন মাচাদো। তাঁর জীবন গুরুতর হুমকির মুখে থাকা সত্ত্বেও তিনি দেশেই আছেন, যা লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি দেশের বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করেছেন। ভেনেজুয়েলায় সামরিকীকরণের বিরুদ্ধে তিনি সব সময় সোচ্চার ছিলেন। শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সব সময় ছিলেন অটল।
নোবেল কমিটি বলেছে, স্বৈরশাসকেরা যখন ক্ষমতা দখল করে, তখন যাঁরা স্বাধীনতা রক্ষায় সাহসী ভূমিকা রাখেন, তাঁদের চিহ্নিত করা এবং তাঁদের উদ্দীপনা ও প্রতিরোধকে স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৫৮ বছর বয়সী মাচাদো শুধু একজন রাজনীতিক নন, তিনি একজন শিল্প প্রকৌশলীও। ভেনেজুয়েলায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিকোলা মাদুরোর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন তিনি।
আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে মাচাদো নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। ফলে বিরোধীদলীয় প্রার্থী হিসেবে অ্যাডমান্ডো গঞ্জালেস উরুতিয়াকে সমর্থন দেন এবং তাঁর পক্ষে প্রচার চালান তিনি।
তবে ওই নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ব্যাপক বিরোধ দেখা দেয়। প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে জয়ী ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ। তবে বিরোধীরা এই ফলাফল নাকচ করে দেয়। ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে তারা দাবি করে, নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী অ্যাডমান্ডো গঞ্জালেস জয়ী হয়েছেন।
ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর তা বাতিলের দাবিতে ভেনেজুয়েলাজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্ট মাদুরো কঠোর হাতে বিক্ষোভ দমনের পথে হাঁটেন। এতে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
সরকারি দমন-পীড়নের মুখে বিরোধী নেতা গোনসালেস আত্মগোপনে থাকার পর দেশ ছেড়ে চলে যান। জীবনের ঝুঁকি থাকায় আত্মগোপনে যেতে হয় কোরিনা মাচাদোকেও।
গত বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছিল জাপানের পরমাণু অস্ত্রবিরোধী সংগঠন নিহন হিদানকায়ো। পরমাণু অস্ত্রমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ার প্রচেষ্টা এবং পরমাণু অস্ত্র আর কখনো ব্যবহার করা যে উচিত নয়, সেটি প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যের মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য জাপানের সংগঠনটিকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।