বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনের জন্য কাউন্সিলরদের নাম জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল আজ সন্ধ্যা ৬টায়। এরপর বিসিবির সভা শেষে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল সন্ধ্যা ৭টায়। কিন্তু রাত পৌনে ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্তও বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভা শুরু হয়নি। প্রকাশ হয়নি খসড়া ভোটার তালিকাও।
কাউন্সিলরদের নাম জমা শেষ হয়েছে কিনা, তা নিয়েও আছে ধোঁয়াশা। তবে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা ৬টায় সময় নির্ধারিত শেষ হয়ে যাওয়া পর্যন্তও সব জেলা ও বিভাগ থেকে কাউন্সিলরদের নাম বোর্ডে জমা হয়নি। সে কারণেই পেছানো হয়েছে বোর্ড সভা।
বিসিবির পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির প্রধান ইফতেখার রহমান মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, সন্ধ্যা ৬টা ১১ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় তাঁরা জানতে পারেন ৬টার সভা পিছিয়ে রাত ৯টায় নেওয়া হয়েছে। কেন সভা পেছানো হয়েছে, সে প্রশ্নের অবশ্য কোনো উত্তর দেননি তিনি।
জেলা ও বিভাগ থেকে বিসিবির কাউন্সিলর মনোনয়ন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই বিতর্ক চলছে। বিতর্কের সূত্রপাত ১৮ সেপ্টেম্বর জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কাছে বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলামের একটি চিঠি। কাউন্সিলরদের নাম জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৭ সেপ্টেম্বর হলেও ওই চিঠির পর দুই দফা সময় বাড়ানো হয়। প্রথমে ১৯ সেপ্টেম্বর ও পরে শেষ সময় নির্ধারণ করা হয় আজ ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায়।

জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার প্রধানদের কাছে পাঠানো বিসিবি সভাপতি স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বিসিবির কাউন্সিলর হিসেবে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে নাম প্রেরণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা যথাযথভাবে মানা হয়নি। আগের ফরম বাতিল করে তাই বিসিবি থেকে পাঠানো নতুন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে ২২ সেপ্টেম্বর (আগামীকাল) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কাউন্সিলরের নাম পাঠাতে হবে।
গতকাল জেলা, বিভাগ ও ক্লাব সংগঠকদের এক সংবাদ সম্মেলনে এর সমালোচনা করে ওল্ড ডিওএইচএসের কাউন্সিলর জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘এই নোংরামিটা করা উচিত নয়। নির্বাচন হবে সুষ্ঠু। এখানে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না।’ তবে পরে বোর্ড সভাপতি আমিনুল ইসলাম দাবি করেন, তাঁরা গঠনতন্ত্রের বাইরে কিছু করছেন না। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় থেকে কাউন্সিলর হিসেবে এমন অনেকের নাম পাঠানো হয়েছে যারা কাউন্সিলর হওয়ার শর্ত পূরণ করেন না। এখানে উল্লেখ্য যে, বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিলর হিসেবে সাবেক ক্রিকেটার অথবা ক্রিকেট সংগঠককে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

এদিকে আজ দুপুরে এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে আমিনুল ইসলামের ১৮ সেপ্টেম্বর দেওয়া চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করে হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন, পরে তা স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। হাইকোর্ট আদেশ দেওয়ার দেড় ঘণ্টা পর এ আদেশ দেওয়া হয়। অবশ্য রিট আবেদনকারীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, আজ রাতেই আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে তারা পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন।
তফসিল অনুযায়ী আগামী ৬ অক্টোবর বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন হওয়ার কথা।