ঝগড়া থেকে দেয়ালে মাথা ঠোকা, সালমান-ঐশ্বরিয়ার সম্পর্কের বিষয় প্রকাশ্যে আনলেন প্রতিবেশী

0
6
সিনেমার দৃশ্যে সালমান ও ঐশ্বরিয়া। আইএমডিবি

বলিউডের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত প্রেম-বিচ্ছেদের একটি হলো ঐশ্বরিয়া রাই ও সালমান খানের সম্পর্ক। প্রেমের সূচনা হয়েছিল পর্দার আড়ালেই, কিন্তু আলোচনায় আসে ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ ছবির মাধ্যমে। ছবির রোমান্স যেন বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল। অথচ সেই রূপকথার প্রেমই কিছুদিনের মধ্যে রূপ নেয় দুঃস্বপ্নে। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর শুধু ব্যক্তিজীবন নয়, কর্মজীবনেও কঠিন আঘাত সহ্য করতে হয়েছিল ঐশ্বরিয়াকে।

প্রতিবেশীর চোখে সেই সময়
বিজ্ঞাপন জগতের কিংবদন্তি প্রহ্লাদ কাক্কর ছিলেন ঐশ্বরিয়ার ঘনিষ্ঠজন। ঐশ্বরিয়ার মায়ের একই ভবনে থাকতেন তিনি। সম্পর্কের শুরুর দিক থেকে ক্যারিয়ারের উত্থান—সবকিছু কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। তাঁর মতে, সালমান ছিলেন ভীষণ আক্রমণাত্মক। ঐশ্বরিয়ার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চাইতেন। প্রহ্লাদ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সালমান খুবই আক্রমণাত্মক ছিলেন। আমি একই ভবনে থাকতাম, সবকিছু শুনতাম-দেখতাম। ঝগড়া, চিৎকার, এমনকি দেয়ালে মাথা ঠোকা…এগুলো নিয়মিত ছিল। সম্পর্ক আসলে অনেক আগেই ভেঙে গিয়েছিল, শুধু ঘোষণাটা পরে এসেছে। বিচ্ছেদটা সবার মধ্যে স্বস্তি এনেছিল—ঐশ্বরিয়ার, তাঁর বাবা-মায়ের, এমনকি সালমানেরও।’

ঐশ্বরিয়া ও সালমান খান
ঐশ্বরিয়া ও সালমান খান, ছবি: ফেসবুক

ঐশ্বরিয়ার জন্য সবচেয়ে বড় আঘাত এসেছিল বলিউড থেকে। প্রহ্লাদের ভাষায়, ‘ঐশ্বরিয়া ভীষণ কষ্ট পেয়েছিল। বিচ্ছেদ নিয়ে ওর ততটা দুঃখ ছিল না, বরং আঘাত পেয়েছিল। কারণ, ইন্ডাস্ট্রি পুরোপুরি সালমানের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাকে যেন একঘরে করে দেওয়া হয়েছিল।

সালমান খান ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন
সালমান খান ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন, ফেসবুক থেকে

আস্থার ভাঙন
প্রহ্লাদ মনে করেন, সেই সময়ের পর ঐশ্বরিয়ার ভেতরে বলিউডের প্রতি আস্থা ভেঙে যায়। ‘ও আগে ভীষণ নিবেদিত ছিল। কিন্তু এই ঘটনার পর থেকে আর আগের মতো নিয়মিত কাজ করেনি। মনে হয়েছিল, ইন্ডাস্ট্রি ন্যায়সংগত আচরণ করেনি। সালমানকে সমর্থন দিয়ে ঐশ্বরিয়াকে উপেক্ষা করা হয়েছিল।’

সহ-অভিনেতাদের অভিজ্ঞতা
‘হাম দিল দে চুকে সনম’ ছবির সহ-অভিনেত্রী স্মিতা জয়কর এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘ওদের প্রেম পর্দাতেও ফুটে উঠেছিল। ছবির সাফল্যে তা বড় ভূমিকা রেখেছিল।’ তবে অন্য সহ-অভিনেত্রী শিবা চাড্ডা ভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা বলেন। তাঁর ভাষায়, ‘শুটিং সেটে সালমানের মেজাজি স্বভাব বহুবার দেখেছি। একবার ক্ষেপে গিয়ে হুট করে সেট ছেড়ে বেরিয়ে যান। এমনকি এক ক্লাইম্যাক্স দৃশ্যে আমাকে আলিঙ্গন করার কথা ছিল, তিনি তা করতে অস্বীকার করেন। শুটিং বন্ধ হয়ে যায়, পরে বানসালি এসে তাঁকে বোঝান।’

আঘাতের ছায়া
আজকের ঐশ্বরিয়া রাই—একজন বিশ্বসুন্দরী, সফল অভিনেত্রী, জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের শুভেচ্ছাদূত, আবার এক সন্তানের মা। তবু প্রহ্লাদের মতে, সম্পর্ক ভাঙনের পর যে মানসিক আঘাত তিনি পেয়েছিলেন, তা এখনো কোথাও না কোথাও রয়ে গেছে। হয়তো সেই কারণেই আগের মতো নিয়মিত পর্দায় আসেন না তিনি।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.