যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে একটি গাড়ি তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়েছে দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। অভিযানে প্রায় ৫০০ জনকে আটক করা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এটিই ছিল কোনো কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অভিযান।
প্রায় তিন হাজার একরজুড়ে বিস্তৃত কারখানাটি কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাইয়ের। ওই কারখানায় এক বছর ধরে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের অধিকাংশই দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক।
এ ঘটনায় ‘উদ্বেগ ও দুঃখ’ প্রকাশ করছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটি তাদের নাগরিকদের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ বিবিসিকে বলেছে, অবৈধ কর্মসংস্থান ও অন্যান্য গুরুতর অপরাধের অভিযোগে তল্লাশি পরোয়ানা হাতে পাওয়ার পর এ অভিযান চালানো হয়েছে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের তদন্ত শাখার আটলান্টার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ শ্রাঙ্ক গতকাল শুক্রবার আটলান্টায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটি কোনো অভিবাসনবিরোধী অভিযান ছিল না যে এজেন্টরা ভেতরে ঢুকে লোকজনকে ধরে নিয়ে গিয়ে বাসে তুলে দিয়েছেন। এটি ছিল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে কয়েক মাস ধরে চলা তদন্তের অংশ। তিনি বলেন, ‘এ সময় আমরা প্রমাণ সংগ্রহ করেছি, সাক্ষাৎকার নিয়েছি, নথি জোগাড় করেছি ও সেসব আদালতে উপস্থাপন করেছি…যাতে বিচারিক তল্লাশি পরোয়ানা পাওয়া যায়।’
অভিযানের ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দুটি প্রধান অগ্রাধিকারের মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি হতে পারে। একদিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনশীল শিল্প খাত গড়ে তোলায় জোর দিচ্ছেন, অন্যদিকে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন। পাশাপাশি এ ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
গতকাল হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘ওরা ছিল অবৈধ অভিবাসী এবং আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) শুধু তাদের দায়িত্ব পালন করেছে।’
অভিবাসন কর্মকর্তারা বলেছেন, অভিযানে প্রায় ৪৭৫ জনকে আটক করা হয়েছে, যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে ছিলেন বা কাজ করছিলেন। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৩০০ জন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে হুন্দাই মোটর কোম্পানি বলেছে, তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কেউই সরাসরি হুন্দাইয়ের কর্মী নন বলেও দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিবিসি