চীনের সামরিক কুচকাওয়াজ: পুতিনসহ বিশ্বনেতাদের সঙ্গে প্রথম প্রকাশ্য মঞ্চে আসছেন কিম

0
28
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন, ছবি: রয়টার্স

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উন আগামী সপ্তাহে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠেয় একটি সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন বলে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বৈশ্বিক নেতাদের সঙ্গে একক মঞ্চে এটি হবে তাঁর প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক।

জাপানের বিরুদ্ধে চীনের যুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘বিজয় দিবস’–এর কুচকাওয়াজটি আয়োজন করা হচ্ছে।

বিশ্বের ২৬ জন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এ কুচকাওয়াজে চীন তার সর্বাধুনিক অস্ত্র প্রদর্শন করবে। এর মধ্যে থাকবে যুদ্ধবিমান, ট্যাংক ও ড্রোনবিধ্বংসী ব্যবস্থা। প্রথমবারের মতো চীনা সেনাবাহিনীর নতুন গঠন কাঠামো সম্পূর্ণরূপে কুচকাওয়াজে দেখানো হবে।

অত্যন্ত সাজানো-গোছানো এই কুচকাওয়াজে তিয়েনআনমেন স্কয়ারের মধ্য দিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে অগ্রসর হবেন কয়েক হাজার সেনা। চীনের সেনাবাহিনীর ৪৫টি ইউনিটের সদস্যসহ সাবেক সেনারাও এতে অংশ নেবেন। প্রায় ৭০ মিনিটব্যাপী এ কুচকাওয়াজ তত্ত্বাবধান করবেন প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। পশ্চিমা বিশ্ব ও সামরিক বিশ্লেষকদের চোখ থাকবে এই অনুষ্ঠানের দিকে।

অত্যন্ত সাজানো-গোছানো এ কুচকাওয়াজে তিয়েনআনমেন স্কয়ারের মধ্য দিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে অগ্রসর হবেন কয়েক হাজার সেনা। চীনের সেনাবাহিনীর ৪৫টি ইউনিটের সদস্যসহ সাবেক সেনারাও এতে অংশ নেবেন। প্রায় ৭০ মিনিটব্যাপী এ কুচকাওয়াজ তত্ত্বাবধান করবেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। পশ্চিমা বিশ্ব ও সামরিক বিশ্লেষকেদের চোখ থাকবে এ অনুষ্ঠানের দিকে।

আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের ‘ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বের’ প্রশংসা করে বলেছে, দুই দেশ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সহযোগিতা চালিয়ে যাবে।

২০১৫ সালে চীনের বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে পিয়ংইয়ং একজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছিল। এবার কিম জং-উন নিজেই উপস্থিত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আর এমনটি ঘটলে বেইজিংয়ের কেন্দ্রে পুতিন ও সি চিন পিংয়ের পাশে কিমকে দেখা যাবে। এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় ঘটনা হবে এবং সির জন্য কূটনৈতিক সাফল্যও।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে তিনি পুতিনের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে চান। পাশাপাশি গত সপ্তাহে ঘোষণা করেন, কিমের সঙ্গে তিনি আবারও দেখা করতে আগ্রহী। এমন প্রেক্ষাপটে সি ইঙ্গিত দিচ্ছেন, কূটনৈতিক এ খেলায় তাঁর হাতে রয়েছে ভূরাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি। সীমিত পরিসরে হলেও এ দুই নেতার (পুতিন–কিম) ওপর তাঁর প্রভাব রয়েছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং কুচকাওয়াজে যোগ দেবেন কি না। তিনি যদি যোগ দেন, তবে ২০১৯ সালে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদের মধ্যে এটিই হবে প্রথম মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ।

এদিকে সামরিক কুচকাওয়াজের সময় নির্ধারণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, হোয়াইট হাউস ইঙ্গিত দিয়েছে, অক্টোবরের শেষ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ অঞ্চলে সফর করতে পারেন এবং তিনি সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে আগ্রহী। সে ক্ষেত্রে কিম জং-উন ও পুতিনের কাছ থেকে অনেক তথ্য জেনেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন চীনের নেতা।

কিম জং-উন সর্বশেষ বেইজিং সফর করেছিলেন ২০১৯ সালে। এর আগে ২০১৮ সালে তিনবার বেইজিং গিয়েছিলেন তিনি।

পশ্চিমা নেতাদের বেশির ভাগই এবারের কুচকাওয়াজে যোগ দেবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর কারণ, মূলত ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পুতিনের সঙ্গে তাঁদের দ্বন্দ্ব। জাপানও আগেই অন্য দেশগুলোর নেতাদের কুচকাওয়াজে অংশ না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং কুচকাওয়াজে যোগ দেবেন কি না। তিনি যদি যোগ দেন, তবে ২০১৯ সালের পর উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদের মধ্যে এটিই হবে প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ।

দক্ষিণ কোরিয়ার নেতা লি কুচকাওয়াজে যোগ দিলে তাঁর সঙ্গে কিমের সরাসরি সাক্ষাৎ হতে পারে। কিন্তু এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ। কিম যদি প্রকাশ্যে তাঁকে উপেক্ষা বা তিরস্কার করেন, তবে তা লির জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার নেতা লি কুচকাওয়াজে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেলেও এখনো তা গ্রহণ করেননি তিনি। তাঁর সরকার অধস্তন একজন রাজনীতিককে সেখানে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।

লি গত জুনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। বারবারই কিম জং-উনের সঙ্গে তিনি আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতেও আগ্রহী তিনি। গত সোমবার ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি স্থাপনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা নিতে ট্রাম্পকে অনুরোধ করেন লি। পাশাপাশি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

তবে উত্তর কোরিয়া লির সব প্রস্তাব একের পর এক প্রত্যাখ্যান করেছে। এমনকি গতকাল তাদের সরকারি সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ লিকে ‘সংঘাতপ্রবণ উন্মাদ’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

লি কুচকাওয়াজে যোগ দিলে তাঁর সঙ্গে কিমের সরাসরি সাক্ষাৎ হতে পারে। কিন্তু এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ। কিম যদি প্রকাশ্যে তাঁকে উপেক্ষা বা তিরস্কার করেন, তবে তা লির জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর হবে।

এ ছাড়া রাশিয়া, বেলারুশ ও ইরানের প্রেসিডেন্টদের পাশে লির ছবি দক্ষিণ কোরিয়ার জন্যও অস্বস্তিকর হতে পারে। এখন পর্যন্ত কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণের ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয় কোনো মন্তব্য করেনি।

বিবিসি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.