বেসরকারি মেডিকেল: মানে পিছিয়ে থাকা কলেজে ভর্তির আগ্রহ কমেছে

0
20
শেষে বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তি

চলতি বছর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন এক লাখ ৩১ হাজার শিক্ষার্থী। পাস করে ৬০ হাজারের বেশি। সরকারি ৩৭টিতে ভর্তি শেষে বেসরকারি মেডিকেলে শুরু হয় ভর্তি। আসন ৬ হাজার ২৯৩টি।

সরকারি কলেজের মতো করেই বেসরকারিতেও ভর্তি চলে অটোমেশন পদ্ধতিতে। শিক্ষার্থীরা তাদের মেধাক্রম অনুযায়ী কলেজ বাছাইয়ের সুযোগ পান। এতে ৬৭টি মেডিকেলে ভর্তি হয় পাঁচ হাজার ৮৫৬ জন। এবার ১৪টি কলেজ সবচেয়ে কম শিক্ষার্থী পেয়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে ফাঁকা ৪৩৭টি আসন।

যে তালিকার তলানিতে প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ, বিক্রমপুর ভূইয়া ও সিটি মেডিকেল কলেজ। মূলত, কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এতটাই দুর্বল যে তারা শিক্ষার্থীই পাচ্ছে না।

প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আ ন ম নওশাদ খান বললেন, লাইব্রেরি-মিউজিয়াম যেমন জরুরি, তেমনই প্রত্যেকটা জিনিসই জরুরি; ল্যাবরেটরি-ও। মানুষ তো জানে ওখানে পড়তে গেলে আসলে চিকিৎসক হওয়া যাবে না, ডাক্তার নামের একটা যেকোনো বস্তু হওয়া যাবে। আল্টিমেটলি ওই সব জায়গাতে তো ভর্তি হচ্ছে না।

কিশোরগঞ্জের আব্দুল হামিদ মেডিকেল কলেজে আসন ৯৫টি হলেও শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে মাত্র ৪৩ জন। মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর ভূইয়া মেডিকেলে শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে মাত্র ১৪ জন। অথচ আসন ৫৭টি। আর গাজীপুরের সিটি মেডিকেলে ফাঁকা আছে ৪২টি আসন।

এছাড়া, নারায়ণগঞ্জের ইউএস বাংলা মেডিকেল, সিলেটের পার্কভিউ, রংপুরের প্রাইমে বেশ কিছু আসন ফাঁকা।

শুধু তাই নয় ঢাকার কলেজ হওয়ার পরও মার্কস, আশিয়ান ও শাহাবুদ্দিন মেডিকেলে শিক্ষার্থী ভর্তির আগ্রহ ছিল কম।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেছেন, শিক্ষার্থী না পাওয়া এটা বুঝায় যে মানসম্মত প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় ব্যর্থ হওয়ায় অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রছাত্রীদের কাছে কলেজটি পছন্দের কলেজ হয়ে উঠতে পারছে না। কলেজ মালিকদেরকে আসলে বুঝতে সাহায্য করবে যে উনার কলেজে আসলেই ছাত্ররা ভর্তি হতে চাচ্ছেন না।

অটোমেশন চালু হওয়ার আগে শিক্ষার্থী ভর্তির কর্তৃত্ব ছিল কলেজের হাতে। এখন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হওয়ায় বেড়েছে স্বচ্ছতা ও মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তির হার। আর এতেই অসুবিধায় পড়েছে মানহীন মেডিকেল কলেজ।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিশেষ করে যারা প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোতে পড়তে চান, তারা তো অর্থের বিনিময়ে পড়েন। তারা চান একটা উপযুক্ত মানসম্পন্ন মেডিকেল কলেজে শিক্ষালাভ করবেন। সেক্ষেত্রে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মানসম্পন্ন নয়, সেগুলোর চাহিদা দিনে দিনে কমে আসবে এবং আমরা মনে করছি যে এ রকম একটা ন্যাচারাল ওয়েতেই যেগুলো মানসম্পন্ন মেডিকেল কলেজ নয়, সেগুলো একদিন বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য হবে।

রাজনৈতিক বিবেচনা ও তদবিরের জোরে অনেক মেডিকেলে আসন বাড়ানোর অভিযোগ আছে। সেগুলোর আসন যৌক্তিকভাবে কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

হাসান মিসবাহ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.