স্টেডিয়াম নির্মাণের ব্যয় ৫১ লাখ থেকে ১৪ কোটি হওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন ক্রীড়া সচিব

0
27
যুব ও ক্রীড়া সচিব মাহবুবুল আলম

গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় এসে সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম তৈরির উদ্বোগ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী। সম্প্রতি সেই প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে একটি পত্রিকায় ‘৫১ লাখ টাকার স্টেডিয়াম ১৪ কোটিতে করার অনুমোদন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

তবে এই সংবাদটি অসত্য ও তথ্যগতভাবে অসম্পূর্ণ বলে জানিয়েছে যুব ও ক্রীড়া সচিব মাহবুবুল আলম। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সচিবালয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে জানানো যাচ্ছে যে, এই প্রতিবেদনটি অসত্য, তথ্যগতভাবে অসম্পূর্ণ এবং প্রকল্পের বাস্তব পরিস্থিতি উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছে। সংবাদে প্রকৃত তথ্য তুলে না ধরে অসত্য তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রয়াস লক্ষ্য করা গেছে।

‘প্রকৃত তথ্য হচ্ছে সংবাদে উল্লেখিত ‘৫১ লাখ টাকার স্টেডিয়াম’ উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ ১ম পর্যায় (১৩১টি) প্রকল্পের আওতাভুক্ত, যার গড় ব্যয় ছিল প্রায় ৫৩.৫২ লাখ টাকা। এটি ছিল সরকারি খাসজমিতে সীমিত অবকাঠামো। এই অবকাঠামোতে ছিল একতলা প্যাভিলিয়ন, টয়লেট ব্লক, আরসিসি বেঞ্চ এবং মাঠ উন্নয়ন।’

ব্যয় বাড়ার কারণ উল্লেখ করে মাহবুবুল আলম বলেন, বর্তমান প্রকল্পটি উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ-২য় পর্যায় (১ম সংশোধিত), যা বহুল বিস্তৃত অবকাঠামো, জমি অধিগ্রহণ ও ভূমি উন্নয়নসহ ১২৩টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং এর অনুমোদিত গড় ব্যয় ১৪.২০ কোটি টাকা, যা পূর্বের চেয়ে কয়েকগুণ উন্নত এবং পরিসর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত।

ব্যয় অনুমোদন ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে ক্রীড়া সচিব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ‘উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে ‘উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম প্রকল্প’ নামকরণ করেছে। প্রকল্পটির ব্যয় নির্ধারণ এবং ২০২৫ সালের ২১ মে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভার সিদ্ধান্ত ও সুপারিশ অনুযায়ী পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদন হয়েছে।

তিনি বলেন, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক এবং বিশেষজ্ঞ সদস্যদের সমন্বয়ে একটি ব্যয় পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়, যার সুপারিশের ভিত্তিতেই ব্যয়ের যৌক্তিকতা যাচাইপূর্বক অনুমোদন দেওয়া হয়।

প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, জমি অধিগ্রহণ, অবকাঠামোর পরিসর বৃদ্ধি, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও ড্রেনেজ সিস্টেম সংযোজন, গ্যালারি নির্মাণ, সোলার প্যানেল নির্মাণ, পিডাব্লিউডি-এর ২০১৮ এর রেট সিডিউলের পরিবর্তে ২০২২-এর রেট সিডিউল অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করা হয়। এ জন্য প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে।

প্রকল্পে আসিফ মাহমুদের একক আগ্রহ নিয়ে ক্রীড়া সচিবের ভাষ্য, প্রতিবেদনে ‘আসিফ মাহমুদের আগ্রহে পাস’ মন্তব্যটি সম্পূর্ণরূপে অসত্য, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রকল্প অনুমোদনের কোনো ধাপে ব্যক্তিবিশেষের একক প্রভাব বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ নেই। এ ধরনের মন্তব্য প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের পেশাগত সম্মানহানি করে।

‘একনেক কর্তৃক অনুমোদনযোগ্য প্রতিটি প্রকল্প প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাগণের উপস্থিতিতে ও সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য উপস্থাপন করে থাকেন এবং বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে তা অনুমোদিত হয়ে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, প্রকাশিত সংবাদে প্রকল্পের পর্যায়ভিত্তিক কাঠামো, বাজেট ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য উপেক্ষা করে ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়েছে, যা জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করেছে এবং রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রতি অনাস্থা সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি করেছে। এই মর্মে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.