পুলিশ হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু: স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি পরিবারের

0
19

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত যুবদল নেতা আসিফ শিকদারের ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে পরিবার। পাশাপাশি দায়ীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিহিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে আসিফ শিকদারের স্ত্রী স্বপ্না বেগম এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, আসিফ হত্যা শুধু একটি বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ডই নয়, এটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আদর্শিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চেতনা ও মানবাধিকারের প্রতি চরম অবহেলার বর্হিপ্রকাশ। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ফ্যাসিবাদের আমলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

তিনি জানান, গত ২০ জুলাই যৌথবাহিনী পরিচয় যুবদল নেতা আসিফ শিকদারকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় বাসা। শাহ আলী থানায় নিয়ে গিয়ে তার ওপর অমানবিক নিপীড়ন চালানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নেয়া হলে মারা যান তিনি। এঘটনায় সরকারের কাছে ন্যায় বিচারের প্রত্যাশা করেন নিহতের স্ত্রী।

এর আগে, গত ২৩ জুলাই রাজধানীর শাহ আলী থানা হাজতে যুবদল নেতা আসিফ সিকদারের মৃত্যুর ঘটনায় মিরপুরের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাকসুদুর রহমান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম, মেজর মুদাব্বিরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০ জুলাই রাত দেড়টার দিকে বাদীর শাহ আলী থানাধীন নিউ সি ব্লকের ১ নম্বর সেকশনের ২২ নম্বর রোডের ১১ নম্বর বাসায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও সাদা পোশাক পরা পুলিশ প্রবেশ করে। বাসার বিভিন্ন জিনিস তছনছ করে তারা বাদীর ছেলে শাহ আলী থানার ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের যুবদলের সেক্রেটারি আসিফ সিকদারকে আটক করে। বাসার মধ্যেই আসিফের হাত-পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে তারা। মারধর করতে করতে রাত ৩টার দিকে তাকে থানায় নেয়া হয়।

ফজরের নামাজের পর থানা থেকে বাদীর বাসায় ফোন আসে। ফোনে বলা হয়, আসিফ প্রস্রাব-পায়খানা করে তাঁর কাপড়চোপড় নষ্ট করে ফেলেছেন। তাঁর জামাকাপড় পরিবর্তন করা দরকার। বাদী ও তাঁর বাসার সবাই মিলে থানায় যান। নতুন কাপড়চোপড় দেন। কিন্তু ছেলেকে পুলিশ দেখতে দেয়নি। থানা থেকে বলা হয়, আসিফকে ‘ইলেকট্রিক শক’ দেওয়া হয়েছে। বাদীকে থানা থেকে চলে যেতে বলা হয়। অন্যথায় তাঁদের ওপর গুলি চালানো হবে বলে হুমকি দেয় পুলিশ। বাদী তাঁর বাসার লোকজন নিয়ে ভয়ে থানা থেকে বাসায় চলে যান। দুপুর ১টার দিকে থানা থেকে ফোন করে জানানো হয়, আসিফ মারা গেছেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং পুলিশের সোর্স ও অন্যরা পরস্পর যোগসাজশে নির্মমভাবে হত্যা করার পর বাদী থানায় গেলে থানা থেকে লাশ নিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করার হুমকি দেয়া হয়। পরে বাদী থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ তা নেয়নি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.