
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারা দেশের সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা করেছে। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি রিফাত রশিদ।
সংবাদ সম্মেলনে রিফাত রশিদ বলেছেন, ‘সারা দেশে আমরা দেখতে পাচ্ছি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে নামে–বেনামে অনেক ধরনের অপকর্ম করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক শেল্টারে বা তারা বিপথগামী হয়ে চাঁদাবাজি, দুর্নীতিতে জড়িয়েছে, যা আমাদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি বাদে সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করছি।’
আজকের পর থেকে বৈষম্যবিরোধীর ব্যানার ব্যবহার করে কোনো ধরনের অপকর্ম করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রিফাত রশিদ।
রাজধানীর গুলশানে একজন সাবেক সংসদ সদস্যের বাসায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতা; গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের এক নেতাসহ পাঁচজন গ্রেপ্তার হওয়ার পরদিন এই সিদ্ধান্ত জানাল সংগঠনটি।
গতকাল রাতে গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন (মুন্না) এবং সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গুলশান থানায় করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই চারজনকে আজ সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্যোগে কয়েক মাস আগে ছাত্রসংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। এই সংগঠন হওয়ার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গত ফেব্রুয়ারিতে সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছিল, সেই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছিল আবদুর রাজ্জাককে।
চাঁদাবাজির মামলায় গুলশান থানার পুলিশের পক্ষ থেকে আজ আদালতে বলা হয়েছে, আসামিরা সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে থাকেন। ঘটনার বিবরণে পুলিশ বলেছে, ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির নেতা আবদুর রাজ্জাক (রিয়াদ) ও কাজী গৌরব অপু সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। বলতে থাকেন, টাকা না দিলে গ্রেপ্তার করাবেন। তখন শাম্মী আহমেদের স্বামী তাঁদের ১০ লাখ টাকা চাঁদা দেন। আবার গতকাল আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজি করতে যান। খবর পেয়ে পুলিশ আবদুর রাজ্জাকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।