ইসরায়েল ও সিরিয়া একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে রাজি হয়েছে বলে গতকাল শুক্রবার জানিয়েছেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত। সিরিয়ার দ্রুজ–অধ্যুষিত এলাকায় কয়েক দিন ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছিল। সংঘাতে এ পর্যন্ত তিন শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েল গত বুধবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ও দক্ষিণের সুয়েইদা অঞ্চলে বিমান হামলা চালায়। এ সময় সুয়েইদা থেকে সরকারি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানায় ইসরায়েল। দেশটির দাবি, তারা সিরিয়ার দ্রুজ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষার জন্য এ হামলা চালিয়েছে। সম্প্রদায়টি ছোট হলেও বেশ প্রভাবশালী। দ্রুজদের একটি অংশ ইসরায়েল ও লেবাননে বসবাস করে।
তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘আমরা দ্রুজ, বেদুইন ও সুন্নিদের অস্ত্র ত্যাগ করার এবং অন্য সংখ্যালঘুদের নিয়ে একটি নতুন ও ঐক্যবদ্ধ সিরিয়া গড়ার আহ্বান জানিয়েছি।’
টম ব্যারাক আরও বলেন, তুরস্ক, জর্ডান ও প্রতিবেশী দেশগুলো–সমর্থিত একটি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল ও সিরিয়া।
ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাস ও সিরীয় কনস্যুলেট এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
সিরিয়ার সুয়েইদা অঞ্চলে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সহিংসতা চলছে। বেদুইন যোদ্ধা ও দ্রুজ গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে এ সহিংসতা শুরু হয়।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের দপ্তর গতকাল শুক্রবার রাতে জানায়, দক্ষিণাঞ্চলে সংঘর্ষ থামাতে বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হবে। নতুন করে যাতে সংঘাত শুরু না হয় এবং স্থিতিশীলতা ফিরে আসে, সে জন্য রাজনৈতিক ও নিরাপত্তামূলক উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সংঘাত বন্ধে এ সপ্তাহের শুরুতে সেখানে সরকারি সেনা পাঠায় দামেস্ক। কিন্তু সেনারা স্থানীয় দ্রুজদের ওপর ব্যাপক নিপীড়ন চালান বলে অভিযোগ ওঠে। বুধবার ইসরায়েলি হামলায় আক্রান্ত হয়ে সরকারি সেনারা পিছু হটেন।
ইসরায়েল বারবার বলেছে, তারা সিরিয়াকে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে সেনা মোতায়েন করতে দেবে না। কিন্তু গতকাল এ অবস্থান থেকে কিছুটা সরে আসে ইসরায়েল। তারা বলেছে, সংঘর্ষ বন্ধে তারা সিরীয় বাহিনীকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ওই এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেবে।
সিরিয়ার নতুন শাসকদের ‘আপাত ছদ্মবেশী জিহাদি’ বর্ণনা করে ইসরায়েল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা ওই অঞ্চলের দ্রুজ জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করবে। এতে ইসরায়েলে বসবাসরত দ্রুজ সংখ্যালঘুরাও সমর্থন দিয়েছেন।