অজান্তেই ব্লাড সুগার বাড়াচ্ছে আপনার এই ৭ অভ্যাস

0
20
অসুস্থতার সময় আপনার শর্করার মাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুনছবি: পেক্সেলস

অনেকেরই ধারণা, মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া কিংবা সময়মতো ওষুধ না খাওয়াই বোধ হয় ব্লাড সুগার বা রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ। কিন্তু রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাস। অজান্তেই প্রতিদিনের কিছু কাজ নীরবে বাড়িয়ে দিচ্ছে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা।

১. পর্যাপ্ত না ঘুমানো

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা কমে যায়। সেখান থেকে রক্তে শর্করার মাত্রা হুট করে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। চেষ্টা করুন প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার। এ ছাড়া ঘুমানোর আগে মুঠোফোন বা ডিজিটাল পর্দা থেকে দূরে থাকুন।

২. পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া

রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার আরেকটি বড় কারণ পানিশূন্যতা। শরীর যখন পর্যাপ্ত পানি পায় না, তখন রক্তে শর্করার ঘনত্ব বেড়ে যায়। নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত পানি খান। বিশেষ করে গ্রীষ্মে সব সময় হাতের কাছে একটা পানির বোতল রাখার চেষ্টা করুন।

৩. ওষুধে অনিয়ম

কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে রক্তে শর্করা বাড়ে। যে কারণে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ খাবেন না। ওষুধের রুটিনে কোনো পরিবর্তন আনার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৪. সময়মতো খাবার না খাওয়া

কাজের চাপে অনেকেই খাবার খেতে ভুলে যান বা অসময়ে খান। অনেকের মনে হয়, এক বেলা না খেলে কী এমন যায় আসে। কিন্তু দুই বেলার খাবারের মধ্যে দীর্ঘ বিরতি থাকলে লিভার তার সঞ্চিত শর্করা রক্তে ছেড়ে দেয়। তাই নিয়মিত বিরতিতে আঁশযুক্ত এবং আমিষ ও শর্করাজাতীয় খাবার খান।

৫. কৃত্রিম মিষ্টি খাওয়া

রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই খাবারে চিনির পরিবর্তে ক্যালরিমুক্ত কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহার করেন। এতে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা ওঠানামা করে। তাই যতটা সম্ভব কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহার পরিহার করুন।

৬. প্যাকেটজাত খাবারের চিনি খাওয়া

অনেক সময় ‘স্বাস্থ্যকর’ খাবার হিসেবে পরিচিত প্যাকেটজাত পণ্যে মাত্রাতিরিক্ত চিনি থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্যাকেটজাত পণ্য খাওয়ার আগে তাতে থাকা চিনির পরিমাণ দেখে নিন।

৭. অতিরিক্ত ব্যায়াম

শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি না থাকলে অতিরিক্ত ব্যায়াম উল্টো ক্ষতির কারণ হতে পারে। বেড়ে যেতে পারে রক্তে শর্করার পরিমাণ। তাই ব্যায়ামের সঙ্গে সঠিক পুষ্টির ভারসাম্য রক্ষা করা খুবই জরুরি।

আরও তিনটি কারণ

১. মানসিক চাপ: মানসিক ও শারীরিক চাপ শরীরে একধরনের হরমোনাল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যা রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দিতে পারে। চেষ্টা করুন যথাসম্ভব মানসিক ও শারীরিক চাপ এড়িয়ে চলার। আর মন প্রফুল্ল রাখতে প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট বড় বড় করে শ্বাসপ্রশ্বাস নিন, হালকা হাঁটাচলা করুন। মন ভালো রাখে, এমন কাজ করুন।

২. অসুস্থতা: অনেক সময় সাধারণ জ্বর–কাশি থেকেও রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। যেকোনো ধরনের অসুস্থতায় শরীর একধরনের স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ করে, যা রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দেয়। অসুস্থতার সময় আপনার শর্করার মাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন।

৩. হরমোনজনিত পরিবর্তন: নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক, গর্ভাবস্থা বা মেনোপজের সময় হরমোনের ওঠানামা বেশ নিয়মিত হয়। এ কারণে রক্তচাপও ওঠানামা করে। এসব পরিবর্তন লক্ষ রাখুন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সূত্র: এভরিডে হেলথ

মৃণাল সাহা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.