জাফলংয়ে পাথর ভাঙার আরও ১৮টি যন্ত্রের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, পাথর ব্যবসায়ীদের কর্মবিরতিও চলছে

0
21
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে টাস্কফোর্স অভিযান চালিয়ে পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। রোববার বিকেলে

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পাথরের অবৈধ ব্যবসা ঠেকাতে তৃতীয় দফায় ফের অভিযান চালিয়েছে টাস্কফোর্স। আজ রোববার চালানো অভিযানে পাথর ভাঙার ১৮টি যন্ত্রের (ক্রাশার মেশিন) বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এর আগে ২৫ ও ১৮ জুন ১৪৪টি যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল।

এদিকে সিলেটের পাথর কোয়ারি ইজারা দিয়ে ফের চালু করা এবং ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ-সংযোগ আবার দেওয়াসহ কিছু দাবিতে গতকাল শনিবার থেকে সিলেটের সব পাথর কোয়ারি থেকে ৪৮ ঘণ্টা লোড-আনলোডে চলমান কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিন ছিল রোববার। সিলেট জেলা পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচি শেষ হবে আগামীকাল সোমবার সকালে।

অভিযান-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রোববার বেলা তিনটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত জাফলং এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিদ্যুৎ বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, পুলিশ, বিজিবি ও বন বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স অভিযান চালায়। অভিযানে পাথর ভাঙার ১৮টি যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মিটার জব্দ করা হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মাহমুদ আশিক। এ সময় বিদ্যুৎ বিভাগ জৈন্তাপুরের আবাসিক প্রকৌশলী সজল চাকলাদার, বিজিবির সংগ্রাম বিওপির ক্যাম্প কমান্ডার শহীদুল ইসলাম, গোয়াইনঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অভিযান শেষে জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মাহমুদ আশিক কবির বলেন, পরিবেশবিধ্বংসী অবৈধ স্থাপনা ও কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। এটা চলমান থাকবে।

১৪ জুন প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) জাফলং পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ সময় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংসহ সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি ভবিষ্যতে ইজারা দেওয়া হবে না।

অন্যদিকে অবৈধ পাথরের ব্যবসা ঠেকাতে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান দ্রুততার সঙ্গে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে থাকা পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। দুই উপদেষ্টার নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই ১৬ জুন থেকে পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোয়ারি থেকে পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধে নির্দেশনা দেয় সরকার। এর পর থেকে রাতের আঁধারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় অবৈধভাবে পাথর ও বালু উত্তোলন চলত। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর কোয়ারির নিয়ন্ত্রণ নেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতায় হাজারো শ্রমিক পাথর উত্তোলন শুরু করেন। এসব পাথর বিক্রি করা হয় পাথর ভাঙার যন্ত্রের মালিকদের কাছে। পরে সেসব পাথর মেশিনে ভেঙে ছোট করে ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.