
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, বর্তমানে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সত্যের চেয়ে ভাইরাল হওয়ার দিকেই মনোযোগ বেশি। এ ধরনের খবর গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচার করা হয়। ভাইরাল নিউজের বাণিজ্যিক ও আর্থিক মূল্য আছে বলে সেটা করা হচ্ছে। এই চিন্তাধারা থেকে বের হওয়া না গেলে দেশের গণমাধ্যমগুলো বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) সেমিনারকক্ষে ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম সাম্প্রতিক অপতথ্যের গতিপ্রকৃতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ কথা বলেন। সেমিনারটি আয়োজন করে পিআইবি।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, মূলধারার গণমাধ্যম বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে সে জায়গাটা নেবেন কনটেন্ট মেকার বা ব্লগাররা। তিনি বলেন, তাঁরা বিকল্প গণমাধ্যম হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবেন। এ সংকট মোকাবিলায় গণমাধ্যম মালিক ও ম্যানেজমেন্টকে ডিজিটাল ভেরিফিকেশন এবং ফ্যাক্ট চেকিংয়ে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন তিনি।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। সূচনা বক্তব্যে গত ১৫ বছরের সাংবাদিকতার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র নিজে মিথ্যার কারখানায় পরিণত হয়েছিল এবং সংবাদমাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার ফেরিওয়ালা।’ গ্রেপ্তার, নির্যাতন, গুমের ঘটনা ঘটানোর জন্য শিকারি সাংবাদিকতা করা হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত ১৫ বছরের সাংবাদিকতায় দায়িত্বশীল ধারা ক্ষীণ ছিল বলে মনে করেন ফারুক ওয়াসিফ। রাজনৈতিক জায়গা থেকে গণমাধ্যম কোনো অবস্থান নিতে পারেনি বলেন তিনি।
পিআইবির মহাপরিচালক বলেন, অপতথ্যকে শুধু ফ্যাক্টচেক দিয়ে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এটাকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পড়েন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ (ইবিএলআইসিটি) প্রকল্পের পরামর্শক মামুন অর রশীদ। প্রবন্ধের ওপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
এতে বক্তব্য দেন প্রথমা প্রকাশনার প্রধান সমন্বয়কারী মশিউল আলম, একাত্তর টিভির সিওও শফিক আহমেদ, যুগান্তরের নগর সম্পাদক মিজান মালিক প্রমুখ। সংবাদমাধ্যমে অপতথ্য মোকাবিলায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতাবৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত বিনিয়োগের বিষয়গুলোকে তুলে ধরেন তাঁরা। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন পিআইবির জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ।