
চব্বিশের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ডামি ও প্রহসনের নির্বাচন ছিল বলে আদালতে স্বীকার করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে শুনানিতে তিনি তা স্বীকার করেছেন।
ডামি নির্বাচন প্রসঙ্গে সাবেক এ সিইসি দাবি করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না হওয়ার কারণেই ডামি ভোট হয়েছে।
তখন আদালত তাকে প্রশ্ন করেন, তাহলে তিনি কেন পদত্যাগ করেননি? জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ওই অবস্থায় পদত্যাগ করা সম্ভব ছিল না। আমার এক বন্ধুও আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল পদত্যাগের কথা, আমি বলেছি তুমি যদি আগে বলতা এমন ভয়ঙ্কর নির্বাচন হবে তাহলে আমি দায়িত্বই নিতাম না।
কেউ ভোটে না এলে তিনি কি বসে থাকবেন, এমন প্রশ্নও তুলেন সাবেক এ সিইসি। শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলের নির্বাচন, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের অনিয়মের প্রসঙ্গও তিনি আদালতে তুলে ধরেন।
মৌলিক সংস্কার ছাড়া আগামী ১ হাজার বছরেও দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৩ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে সাবেক তিন সিইসিসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে গত রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খান।
এই মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, জাবেদ পাটোয়ারী, এ কে এম শহীদুল হক প্রমুখ।
মামলাটি দায়ের পরপরই এদিন রাতে গ্রেফতার হন আরেক সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদা। পরদিন সোমবার তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আর কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর মগবাজার থেকে গ্রেফতারের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এই মামলায় আদালতে তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল পুলিশ। আধ ঘণ্টার শুনানি শেষে সাবেক এ সিইসির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন আদালত।