রাতে আসছে সিঙ্গাপুর, বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল কবে

0
17
৪২ জনের বহর নিয়ে ঢাকায় আসছে সিঙ্গাপুর, ছবি: ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন অব সিঙ্গাপুর

নতুন দেশ, নতুন স্বপ্ন। মুক্তিযুদ্ধ শেষে রক্তে ভেজা মাটিতে যখন পুনর্গঠনের সংগ্রাম চলছে, ঠিক তখনই বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে শুরু হয় এক নতুন অভিযাত্রা।

১৯৭৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয় বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল, যাদের প্রথম গন্তব্য ছিল মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যবাহী মারদেকা কাপ। সেখানেই ৬ আগস্ট, কুয়ালালামপুরের মারদেকা স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে প্রথম দেখা বাংলাদেশের।

ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই কাজী সালাহউদ্দিনের গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কুয়ালালামপুরের গ্যালারিতে তখন উঠেছিল এক নতুন জাতির নাম—বাংলাদেশ! যদিও ২০ মিনিটে সিঙ্গাপুরের শামসুদ্দিন রহমত গোল করে ম্যাচটা ১-১ করে দেন। শেষ পর্যন্ত ড্র হলেও, সেটি ছিল মনে রাখার মতো এক ম্যাচ।

সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে গোল করেছিলেন কাজী সালাহউদ্দিনছবি: সংগৃহীত

সেবার মারদেকা টুর্নামেন্ট শেষ করে বাংলাদেশ দল সিঙ্গাপুর গিয়েছিল দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে। যার প্রথমটিতে (১৯৭৩ সালের ১৩ আগস্ট) নওশেরুজ্জামানের গোলে জেতে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়টিতে (১৫ আগস্ট) সিঙ্গাপুর যুব দলের কাছে ২–০ গোলে হার।

বাফুফের দেওয়া রেকর্ড অনুযায়ী, প্রথম ম্যাচে সিঙ্গাপুর জাতীয় দল খেলেছে বাংলাাদেশের বিপক্ষে। তবে এই ম্যাচটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে কি না, এমন কোনো তথ্য ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইটগুলোতে পাওয়া যায়নি।

দীর্ঘ বিরতির পর ২০১৫ সালের ৩০ মে ঢাকায় আবার দেখা হয় দুই দেশের জাতীয় দলের। ফিফা প্রীতি ম্যাচে সেদিন বাংলাদেশ শুরুটা করেছিল স্বপ্নময়। চতুর্থ মিনিটেই গোল করেন ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরী। কিন্তু জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ২-১ গোলে ম্যাচটা জিতে নেয় সিঙ্গাপুর।

ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে নিজেদের মাঠে শেষ অনুশীলনে সিঙ্গাপুর দল
ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে নিজেদের মাঠে শেষ অনুশীলনে সিঙ্গাপুর দল, ছবি: ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন অব সিঙ্গাপুর

সেই ম্যাচে যাঁরা খেলেছিলেন, তাঁদের মধ্যে এখনো আছেন তিনজন—জামাল ভূঁইয়া, তপু বর্মণ ও সোহেল রানা। আজকের দলে তাঁরা অভিজ্ঞতার প্রতীক, যাঁদের কাঁধে নতুনদের ভরসা।

তবে এই দুই ম্যাচের মাঝখানে আরেকবার দেখা হয়েছিল সিঙ্গাপুরের সঙ্গে—২০০৭ সালে মালয়েশিয়াতেই মারদেকা কাপে। তবে সেটি ছিল বাংলাদেশ ‘বি’ দল বনাম সিঙ্গাপুর অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ম্যাচ।

সেই সময় বাংলাদেশ মূল দল খেলতে গিয়েছিল ভারতের নেহরু কাপে। ফলে সেলাঙ্গরের শাহ আলম স্টেডিয়ামে নামা দলটি সরকারিভাবে জাতীয় দল ছিল না। ম্যাচটিতে প্রথমার্ধেই দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৮৯ মিনিটে জুমরাতুল ইসলাম মিঠুর গোলে স্কোরলাইন হয় ২-১। বাংলাদেশের সেই হারটা ছিল ‘সম্মানজনকই’।

এবার ২০২৫ সালের ১০ জুন, আবার মুখোমুখি বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর। ভেন্যু আবার ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়াম। ২০২৭ এশিয়ান কাপে যাওয়ার লড়াইয়ে নেমেছে বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর, হংকং ও ভারত। গ্রুপের শীর্ষ দল যাবে মূল পর্বে।

৪২ জনের বহর নিয়ে ঢাকায় আসছে সিঙ্গাপুর
৪২ জনের বহর নিয়ে ঢাকায় আসছে সিঙ্গাপুর, ছবি: ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন অব সিঙ্গাপুর

বাছাইপর্বে প্রথম ম্যাচে দুই দলই গোলশূন্য ড্র করেছে। ফলে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই কারও। আজ রাত পৌনে ১১টায় ঢাকায় পা রাখবে সিঙ্গাপুর দল। ২৩ খেলোয়াড়ের সঙ্গে রয়েছেন কোচিং স্টাফ–কর্মকর্তাসহ আরও ১৯ জন।

অবশ্য সিঙ্গাপুর দলের ম্যানেজারসহ দুজন গতকাল রাতেই ঢাকায় এসেছেন। আজ তাঁরা উত্তরা আর্মড পুলিশ মাঠ পরিদর্শন করেছেন। সেখানেই আগামীকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় অতিথি দলের অনুশীলন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.